ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ঘর ভাঙে মন নয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৪
ঘর ভাঙে মন নয়

আরজিনার মা। ধরলা নদীর পাড়ে তার বাড়ি।

এই বছর বাড়ি ভেঙ্গে গেছে ধরলায়। আবার ছন দিয়ে ঘর তুলেছেন এই ধরলার পাড়েই।

হয়তো আগামীবারও ভাঙবে তার কুড়ে ঘর। তবুও এই ধরলার পাড়েই সাজাতে হবে তার নতুন সংসার। কারণ ধরলায় তাকে দিয়েছে আশ্রয়। তিন ছেলে তাকে ফেলে চলে গেছে, স্বামীর কোনো খোঁজ নেই সেই কত দিন হলো। শ্বশুড়বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া মেয়ে আরজিনাকে নিয়েই তার সংসার। প্রমত্ত এই ধরলাই তার এখন নির্ভরযোগ্য আশ্রয়।

চরম অভাব অনটন, প্রিয়জনের অবহেলায় জীবন যুদ্ধে প্রায় হারতে বসা আরজিনার মা কষ্টের আড়ালে কখন যেন নিজের নামটিই হারিয়ে ফেলেছেন।

এই বছরের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করার জন্য হোপ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন (একটি কানাডিয়ান-বাংলাদেশি অলাভজনক দাতব্য প্রতিষ্ঠান) এর উদ্যোগে এবং বাংলানিউজ২৪.কম এর সহযোগিতায় ১লক্ষ টাকার ওপরে অনুদান তোলা হয়। এই টাকা কীভাবে বিতরণ করা হবে তার পরামর্শ চাওয়া হয় গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনের কাছে। গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনের পরামর্শ মতো এই টাকার অর্ধেক খরচ করা হবে টাঙ্গাইলের যমুনার চরে আর বাকি অর্ধেক দেয়া হবে কুড়িগ্রামে।

আমাদের পরিকল্পনায় ছিলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে একটি করে ছাগল দেয়া হবে।

পরিকল্পনা মতো শিমুলবাড়ি মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান আর স্থানীয় মুরুব্বি মজিবুর রহমানকে নিয়ে গ্রাম পাঠাগার আন্দোলনের সংগঠক, আবদুস সাত্তার খান প্রথমধাপে ২৫ হাজার টাকা দিয়ে ২০টি ছাগল কেনেন।

সম্প্রতি  শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেল, বীরপ্রতিক বদরুজ্জামান স্মৃতি পাঠাগারের সদস্যদের নিয়ে টুংটুঙ্গির চরে দরিদ্র অসহায় পরিবারগুলোর মাঝে ছাগলগুলো বিতরণ করেন।

ছাগল পেয়ে আরজিনার মায়ের চোখ ছলছল করছে। তার আরো ৩টি ছাগল ও ২টি গরু আছে। কিন্তু সেগুলোর মালিক তিনি না। তিনি এগুলো আদি নিয়েছে। মানে এগুলোর যে বাচ্চা হবে তার অর্ধেক পাবে সে আর বাকি অর্ধেক পাবে মালিক। চুক্তি শেষ হলে মালিক আবার এগুলো ফেরত নিতে পারবে। এই বারই সে প্রথম একটি ছাগলের মালিক হলো।

বাংলানিউজের বিএনএসএস, হোপ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ও গ্রাম পাঠাগার আন্দোলন যৌথভাবে কাজ করছে দেশে নানাভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘব করে তাদের জীবনে স্থায়ী সুদিন এনে দিতে।

বন্ধুরা এই পথ চলায় আপনাদের পরামর্শ আর অংশগ্রহণই আমাদের কাজ করার অনুপ্রেরণা।

সমাজের দুঃস্থ ও আর্তপীড়িত মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে বাংলানিউজের নিজস্ব ত্বত্তাবধানে পরিচালিত হচ্ছে 'বাংলানিউজ সোশ্যাল সাভির্স' (বিএনএসএস) সামাজিক সেবা কর্মসূচি।   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।