ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

মান ভাঙাতে মারমেইডে

শারমীনা ইসলাম, লাইফস্টাইল এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৬ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৭
মান ভাঙাতে মারমেইডে মারমেইডে

শাওন-তমার আট বছরের সংসার। প্রথম দিকে কিছু অার্থিক সংকট থাকলেও সংসারে ছিলো সুখের ছড়াছড়ি। দুজনের মধ্যে এতো মিল দেখে প্রায়ই বন্ধুরা মজা করতো হানিমুন-হ্যাপি কাপল বলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বচ্ছলতা এলো, তবে সুখগুলো কোথায় যেন হারিয়ে যেতে থাকলো। 

শাওনের ব্যস্ততা অভিমানী তমার কাছে উপেক্ষা মনে হতে শুরু করলো। তাদের জমানো অভিমানের পরিমাণ এতো বেড়ে গেলো যে, দুজনই এক সময়ে এসে সিদ্ধান্তে এলো, এভাবে আর না।

সরে যাওয়াই সমাধান। এই যখন অবস্থা দুই একজনের মাধ্যমে বন্ধুরাও অনেকেই বিষয়টি জেনে গেলো। বন্ধু রাজীব এগিয়ে এলেন, দুজনকে পরামর্শ দিলেন সব কাজ বাদ দিয়ে দুইটা দিন নিজেদের মতো কাটিয়ে আসতে। কোথায় যাওয়া যায়? সেই খোঁজও দিলেন রাজীব, বললেন সোজা কক্সবাজারে মারমেইড বিচ রির্সোটে চলে যেতে।  

বন্ধুর কথা মতোই সব কাজ গুছিয়ে শাওন-তমা চলে এলেন মারমেইডে। মারমেইডের পরিবেশ, আতিথেয়তা, আন্তরিকতা আর নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর সব আয়োজন দেখে শাওন-তমা টানা পাঁচদিন থেকে গেলেন। যাওয়ার আগে মারমেইডের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজুর রহমানকে বললেন, আমরা খুব খারাপ সময়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম। আপনাদের এখানে এসে নতুন করে নিজেদের খুঁজে পেয়েছি, মান ভেঙে হাত ধরে নতুন করে পথ চলার স্বপ্ন দেখেছি।  

শাওন তমা ফিরে গেছেন নিজেদের সংসারে। সঙ্গে নিয়ে গেছেন মারমেইডে কাটানো সুন্দর সময়ের স্মৃতি। প্রতিদিন এমন হাজারো শাওন-তমার গল্প লেখা হয় মারমেইডের সাগর পাড়ের খোলা হাওয়ায়।  

নতুন দম্পতিদের অনেকেই হানিমুনের জন্য বেছে নিচ্ছেন মারমেইডকে। কেন নয়? দেশের মধ্যে এমন সাজানো প্রকৃতির ছোঁয়ায় নিজেদের খুঁজে পাওয়ার-আনন্দে হারিয়ে যাওয়ার মতো দ্বিতীয়টি যে কোথাও নেই।  

মারমেইডএখানে যাওয়ার পরিকল্পনা যখন শুরু করেন, তখন থেকেই এক স্বপ্নের রাজ্যে ডানা মেলা শুরু হয়। আর গিয়ে যখন মারমেইডের সীমানায় প্রবেশ করলেন, মনে হবে একটি ‍ভিন্ন জগত, শুরুতেই ফুলের মালায় বরণ করে নেবে আপনাকে।  

এরপর পথের ক্লান্তি নিমিষে দূর করতে দেবে ডাবের জল। ডাব খাওয়ার আগে অবশ্যই একটি ছবি তোলা হবে, কারণ এখানেও কারিশিমা, ডাবের গায়ে ছোট্ট সাদা ফুল, পাইপের বদলে চিকন কঞ্চির স্ট্র।  

এরপর চলে গেলেন নিজের বাড়িতে। হুম বাড়িই, প্রতিটি ছোট ছোট ভিলার সামনে অতিথির নাম দেয়া থাকে। আর ঘরের ভেতরে গিয়ে ইন্টেরিয়র দেখে অন্যরকম ভালো লাগায় মন ভরে যাবে।

কিন্তু তখন তো বাইরের পেতে রাখা কাবানাগুলো আপনাকে টানতে থাকবে সাগড় পাড়ে গিয়ে বসার জন্য। এবার খাবারের পালা, মারমেইডের মূল আকর্ষণ। এখানে সকালের নাস্তার বুফেতে অতিথিদের জন্য রয়েছে ৯৯ আইটেম।  

দুপুরে বা রাতে পছন্দের ‍খাবার অর্ডার করতে পারেন, এখানে প্রতিটি খাবারের স্বাদ মুখে আর মনে থাকেবে ফিরে আসার অনেক দিন পরেও। খাবার পরিবেশনের মুন্সিয়ানা তো দেখার মতো, হয়তো নারকেলের খোলে বা কলার মোচায় সাজিয়ে দেয়া হবে লইট্টা ফ্রাই। ভর্তাগুলো পরিবেশন করছে কলার পাতায়। ওহ রাতের মারমেইড কিন্তু মুগ্ধতায় ভরানো্। খাওয়ার সময়টাও বাদ যায় না, বৈদুত্যিক আলোর পরিবর্তে মোম জ্বেলে দেয় এখানে।  

আসলে দুই দিন সময় নিয়ে যদি কেউ ঘুরে আসতে চান, তবে দুই দিন যে কীভাবে কেটে যাবে, বুঝে ওঠার আগেই ফেরার সময় হয়ে যাবে।  

ফেরার সময়টা বারবার শুধু একটি কথাই মনে হবে আবার কবে আসবো!

এতো ভালো লাগা যেখানে ছড়ানো, সেখানে কি কোনো অভিমানের অস্তিত্ব থাকে? 

যোগাযোগ: ০১৮৪১৪১৬৪৬৮
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।