ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ঝিনাইদহে সৌদি খেজুরের চাষ

কাজল চৌধুরী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১০
ঝিনাইদহে সৌদি খেজুরের চাষ

খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত বৃহত্তর যশোরের ঝিনাইদহ জেলায় এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সৌদি খেজুরের চাষ হচ্ছে। বৃহত্তর যশোর জেলার জীববৈচিত্র্য সংরণ প্রকল্পের আওতায় জেলার হরিণাকুন্ড উপজেলার নারায়ণকান্দি, সদর উপজেলার বিষয়খালী, কাশিমনগরসহ বিভিন্ন গ্রামের পরিত্যক্ত বালুময় জমিতে সৌদি খেজুরের চারা রোপণ করা হয়েছে।

গাছগুলো এখন বাড়ন্ত পর্যায়ে রয়েছে। তবে আগামী দু-তিন বছরের মধ্যেই খেজুরের ফলন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর থেকে আগামী তিন বছরের মধ্যে রোপিত তিন লাধিক সৌদি খেজুরের গাছ থেকে অন্তত ১০ হাজার মেট্রিক টন সৌদি খেজুর উৎপাদনের আশা করছে বন বিভাগ ও  চাষিরা।

ঝিনাইদহ জেলা ফরেস্ট অফিসার গিয়াস উদ্দীন মুকুল জানান, তিন বছর আগ থেকে ঝিনাইদহে সৌদি খেজুরের বাগান তৈরি শুরু হয়। ঝিনাইদহ বন বিভাগের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় জেলার পরিত্যক্ত ও বালু জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সৌদি খেজুরের চারা রোপণ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহের ছটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পরিত্যক্ত জমিতে তিন লাখেরও বেশি সৌদি খেজুরের চারা রোপণ হয়েছে। এর মধ্যে হরিণাকুন্ড উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের নারায়ণকান্দি গ্রামের বেলের মাঠে সব থেকে বড় খেজুরের বাগান করা হয়েছে।

হরিণাকুন্ড উপজেলা ফরেস্ট অফিসার নির্মল কুমার মন্ডল জানান বৃহত্তর যশোর জেলার জীববৈচিত্র্য সংরণ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হরিণাকুন্ড উপজেলার নারায়ণকান্দি গ্রামে বালুময় ৫০ বিঘা জমিতে খেজুরের চাষ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। এই গ্রামে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় ৪৮ জন কৃষকের জমিতে খেজুর গাছ রোপণ করা হয়েছে। বাগান রণাবেণের জন্য গঠিত হয়েছে সমবায় সমিতি। কৃষকদের জমি ও বন বিভাগের সম্পূর্ণ আর্থিক সহায়তা নিয়ে সৌদি খেজুরের বাগান করা হচ্ছে। বাগান করার প্রথম দু বছর সরকারিভাবে পরিচর্যাসহ আনুষঙ্গিক খরচাদি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সৌদি খেজুরের বীজ থেকে চারা তৈরি করে পরে সেগুলি সাড়ে ৫ ফুট দূরত্বে জমিতে রোপণ করে পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করলে ছয় বছরেই খেজুর পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, চারা রোপণের পর ছয় বছরের মধ্যে প্রতিটি গাছ থেকে গড় ৪০ কেজি করে সৌদি খেজুর পাওয়া সম্ভব। এছাড়া সৌদি আরবে খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ না করা হলেও বাংলাদেশে রোপিত গাছ থেকে খেজুরের পাশাপাশি রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করা যাবে।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান ঝিনাইদহ জেলায় ২ লাখ খেজুর গাছ থেকে আগামী তিন বছরের মধ্যে ৮ থেকে ১০ হাজার মেট্রিক টন সৌদি খেজুর উৎপাদন সম্ভব হবে। নারায়ণকান্দি গ্রামের কৃষক দবিরুল আলম, আলমগীর হোসেন ও তিজারত আলী জানান, খেজুর বাগান করতে সরকার উদ্বুদ্ধ করেছে। আমরা এখন গাছের পরিচর্যা করছি। কৃষকরা আশাবাদী ৭০ শতাংশ গাছ থেকে আগামী তিন বছরের মধ্যে তারা খেজুর, রস ও গুড় পাবেন।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৬০০, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।