ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ পৌষ ১৪৩১, ০৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬ রজব ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বাবা-মায়ের জন্যও থাক সন্তানের মতোই মমতা 

লাইফস্টাইল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
বাবা-মায়ের জন্যও থাক সন্তানের মতোই মমতা 

প্রতিটি বাবা-মা সন্তানকে অনেক কষ্ট করে বড় করেন, নিজের ক্যারিয়ার এমনভাবে সাজায় যেন সন্তানের সমস্যা না হয়। এদিকে সন্তানেরা বড় হয়ে অনেক সময়ই নিজেদের ক্যারিয়ারের জন্য দেশের শহরে কিংবা বিদেশে দূরে থাকে।

পরিবারের বন্ধন অটুট রাখতে ও বাবা-মায়ের জন্য সন্তান হিসেবে যা করা প্রয়োজন, তার কতটুকু আমরা করছি? 

ক্যারিয়ারের দোহাই দিয়ে অনেকেই বাবা-মাকে দেখতে যাওয়ারও সময় পায় না। বাবা-মায়ের জন্য ক্যারিয়ারকে অ্যাডজাস্ট করে না। বাবা-মায়ের থাকার ব্যবস্থাটা আন্তরিকভাবে তাদের খুশিমতো করতে পারেন না অনেকেই। অথচ বাবা-মায়ের ঘর যত ছোটই হোক সন্তানের জায়গা হয় ওইটুকুর মধ্যেই বেস্ট জায়গায়।  বাবা-মা যদি গ্রামে থাকেন সামর্থ থাকার পরও অনেক সন্তানের শহরের বাড়িতে তাদের থাকার মতো জায়গাও হয় না।  

বাবা-মা শত ঝামেলা, ব্যস্ততা আর অভাবের মধ্যেও সন্তান অসুস্থ হলে, সমস্ত ঝামেলা ব্যস্ততা পাশে রেখে, টাকা যোগাড় করে সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এদিকে, বাবা-মা অসুস্থ হলে সন্তানেরা ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে অনেক সময়ই বাবা-মাকে ডাক্তারের কাছে নিতে দেরি করে বা নেয়ই না অনেকে।  

বাবা-মায়েরা নিজেদের সম্পদ উজার করে সন্তানদের দিয়ে যান। বাবা-মা থাকা অবস্থায় সন্তানেরা জমি বিক্রি করে কোনো কিছু করলে বাবা-মা খুশিই হন। কিন্তু সন্তানেরা বড় হয়ে গেলে বাবা-মা নিজের জমি বেচতে গেলেও অনেকে ঝামেলা করে। আর যদি সন্তানদের নামে লিখে দিয়ে থাকে তবে তো কথাই নেই।  

নাতি-নাতনীদের জন্য দাদা-দাদি/নানা-নানি অসীম আদর-সোহাগ, ভালোবাসা, খোঁজ খবর নেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। নাতি-নাতনীদের অসুস্থতায় ওনাদের চিন্তা আহাজারির শেষ নেই যেন। সে তুলনায় দাদা-দাদি/নানা-নানিদের অসুস্থতায় বা বৃদ্ধ সময়ে নাতি-নাতনীদের ভেতর সেরকম আদর-সোহাগ, ভালোবাসা, উদকণ্ঠা বা উদ্বিগ্নতা কমই দেখা যায়।
সন্তানেরা আজ প্রতিষ্ঠিত, ব্যস্ত। তাদেরও সন্তান রয়েছে, তারাও বৃদ্ধ হবে। তবুও তারা নিজেদের সন্তানের জন্য যেটুকু দরদী হন, সেটুকু দরদ বাবা-মায়ের জন্য বাস্তবিক অর্থে কার্যত দেখান না।

লোকেরা নিজেদের বাবা-মায়ের অসুস্থতায় যতটা আন্তরিক হন, স্পাউজের বাবা-মায়ে অসুস্থতার সময়  ততটুকু আন্তরিক হন না। এটা মোটাদাগে প্রায় সবখানে-সব সংসারে, কতিপয় ব্যতিক্রম ছাড়া।  

স্নেহ নিম্নগামী হয় আমরা জানি। কিন্তু তাই বলে মিনিমাম দায়িত্ববোধ থাকবে না? মনে রাখতে হবে, আজকের সন্তানই কালকের বাবা-মা, পরশুর দাদা দাদি।
যে অস্থির সময়ের ভেতর দিয়ে আমরা যাচ্ছি, বিশেষ করে আমাদের টিনএজার সন্তানদের নিয়ে। অথচ আমাদের বাবা-মায়েরা যদি সঙ্গে থাকেন তবে এসব সমস্যা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।  
বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে সকল ধর্মেই বলা হয়েছে। এসব বিষয়ে সকলের ঘাটতি সমান পরিমাণে না, যার যেটুকু ঘাটতি রয়েছে, সেটা যেন আমরা শোধরানোর চেষ্টা করি।  

লেখক -ড. সফিকুল ইসলাম 
(সরকারি কর্মকর্তা, উপসচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়)

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২১
এসআইএস


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।