ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

কর্মক্ষেত্রে মানসিক দৃঢ়তার ৬টি দিক

নুসরাত জাহান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১০
কর্মক্ষেত্রে মানসিক দৃঢ়তার ৬টি দিক

পেশাজীবীদের জন্য পৃথিবীটা দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে। বিশ্বের দেড় হাজার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) ওপর পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টির সম্মুখীন তারা হচ্ছেন, তা হচ্ছে ‘জটিলতা’।

তবে এ জটিলতা কর্মক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জিং হলেও তা একইসঙ্গে অনেক সুযোগও সৃষ্টি করে।

তবে ক্রমবর্ধমান এ চ্যালেঞ্জকে সফলভাবে মোকাবেলা করে সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন ব্যক্তির মানসিক দৃঢ়তা। কেননা মানসিকভাবে দক্ষ ব্যক্তি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিকূল পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসতে পারেন। আর এ কারণেই শারীরিকভাবে সবল ও কষ্টসহিষ্ণু হওয়া সত্ত্বেও মানসিক দৃঢ়তার অভাবে অনেককেই ব্যর্থ হতে দেখা যায়।

প্রতিযোগিতায় নামার জন্য আপনি কি ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন? এ প্রশ্নের উত্তর নেতিবাচক হলে মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানোর জন্য নিচের ছয়টি উপায় আয়ত্ত বা সেগুলো খেয়াল রাখার চেষ্টা করা যেতে পারে। শারীরিক কসরতের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক দৃঢ়তা বাড়াতে খেলোয়াড়রা মূলত এ বিষয়গুলো চর্চা করে থাকেন।

১.    নমনীয়তা
জটিল কোনো পরিস্থিতিতে সহজ থাকতে হবে। সবকিছু যেভাবে আশা করা হয়, তেমনভাবে নাও ঘটতে পারে। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে হতাশ না হয়ে নমনীয় থাকতে হবে এবং সমস্যার সমাধানের নতুন উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। একইসঙ্গে পূর্ব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা যাচাই করে এর থেকে সমাধান বের করার চেষ্টাও করতে হবে।

২.    দায়িত্বশীলতা
একজন দক্ষ নেতা চাপের মধ্যেও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকেন। হাজারো চাপের মধ্যেও তিনি ক্রমাগতভাবে পরিস্থিতির বিভিন্ন সুযোগ, চ্যালেঞ্জ এবং হুমকি চিহ্ণিত করে চলেন। এক্ষেত্রে অন্যের মতো করে সমস্যাটির সমাধান নাও হতে পারে--এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চলমান বৈশ্বিক ঘটনাবলীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন উপায়ের সন্ধান করতে হবে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা থাকা এবং একইসঙ্গে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেকেই বদলে ফেলার মতো দক্ষতাও একজন ব্যক্তির থাকা উচিত।  

৩.    শক্তিমত্তা
প্রতিকূল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের মতো মানসিক ও শারীরিক শক্তি থাকা একজন ব্যক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এমনকি ব্যর্থ হওয়ার নিশ্চিত সম্ভবনা সত্ত্বেও তাদের মনোবল ধরে রাখা জরুরি। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা নিয়ে লড়বার  মানসিকতা থাকতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের চিন্তাটি থাকে এমন, ‘পরিস্থিতি যখন কঠিন, আমি তখন তার চেয়েও বেশি কঠিন। ’

৪.    আত্মবিশ্বাস ও নৈতিকতা
কষ্টকর হলেও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি যেন অন্যের দ্বারা প্রলুব্ধ বা প্রভাবিত না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

৫.    স্থিতিস্থাপকতা
প্রকৃত একজন নেতার হতাশা, ভুল এবং সুযোগ হারানোর মতো দুঃখজনক পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে খুব দ্রুত কাজে ফিরে আসার ক্ষমতা থাকা জরুরি। প্রতিকূল অবস্থায়ও তাদের আশাবাদী থাকতে হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুত নিজেকে পরিবর্তনের ক্ষমতা থাকতে হবে। সমস্যা সমাধানের দক্ষতাসহ অল্প সম্পদ দিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

৬.    খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব
সব ব্যক্তির মধ্যেই একটি খেলোয়াড়সুলভ মনোভাব থাকা জরুরি। তাদের পরিকল্পনা যেন কখনোই তার বিরোধীরা জানতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যের দ্বারা আক্রান্ত হলে বা হেরে গেলেও পেশাদারের মতো পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।

বর্তমান প্রতিযোগিতার যুগে সফলভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য আমাদের সবারই এই দৃঢ়তাগুলো অর্জন করা প্রয়োজন। কেননা, শুধু কৌশলগত দক্ষতা আমাদের সফলতা এনে দিতে পারবে না। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে জটিল প্রশ্ন ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। এক্ষেত্রে প্রতিটি পেশাজীবী ব্যক্তিকেই হতাশ না হয়ে বরং একজন দক্ষ খেলোয়াড়ের মতো দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিকূলতাকে মেনে নিতে হবে। ফোর্বস সাময়িকী অবলম্বনে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।