ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লন্ডন

গণহত্যা অস্বীকারের প্রতিবাদ

লন্ডন পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৫
লন্ডন পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততাকে অস্বীকৃতি জানিয়ে পাকিস্তান সরকারের দেয়া বক্তব্যর প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম (আইসিএসএফ)।  

বুধবার লন্ডনের পাকিস্তান হাইকমিশনের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে এই প্রতিবাদ জানায় আইসিএসএফ।



সমাবেশে পাকিস্তানের এই হঠকারী অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে উপস্থিত জনতা পোস্টার, ফেস্টুন এবং স্লোগানের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের অত্যাচার নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।

সমাবেশে বলা হয় ৩০ লক্ষ মানুষ হত্যা, ২ লক্ষ নারীর উপর অত্যাচারের মাধ্যমে পাকিস্তানী আর্মি তাদের স্থানীয় দোসররা যে গণহত্যা সংগঠিত করেছিলো তা মানব ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে বাঁচার তাগিদে ১ কোটি বেসামরিক বাঙালি তখন আশ্রয় নিয়েছিলো ভারতের সীমান্তে রিফিউজি ক্যাম্পে এবং প্রায় ৩ কোটি বেসামরিক মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে হয়েছিলেন বাস্তুচ্যুত।

সমাবেশে বলা হয়, এসব গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধের বিষয়ে পাকিস্তানের অস্বীকৃতি জানানো মূলত প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক সত্য অস্বীকার করা এবং বাংলাদেশের সুদীর্ঘ স্বাধীনতার সংগ্রামকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস।

সমাবেশের বক্তারা পাকিস্তানের এই নীতিবহির্ভূত অবস্থানের প্রতিবাদে অবিলম্বে তাদের বক্তব্য প্রত্যাহার এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের আপত্তিকর বক্তব্যসহ বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপকারী যে কোন বক্তব্য প্রদানে বিরত থাকার জন্য পাকিস্তান সরকারের কাছে দাবি জানান। সেই সাথে পাকিস্তানের চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে তদন্ত শুরু ও তাদের বিচারের আওতায় আনা, অন্যথায় বাংলাদেশের মাটিতে তাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরুতে বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতার দাবিও দৃঢ়ভাবে উচ্চারিত হয়।

যুদ্ধকালীন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক গণহত্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেয়া, অবিভক্ত পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ন্যায্য অংশীদারিত্বের সম্পদ বাবদ প্রায় ৪.৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পাকিস্তান কর্তৃক আত্মসাৎকৃত ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ঘূর্ণিঝড় দুর্গতদের সাহায্যার্থে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনুদিত ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ন্যায্য হিস্যা বুঝিয়ে দেয়ার দাবি উত্থাপন করা হয় প্রতিবাদ সমাবেশে।

সমাবেশে ১৯৭১ এ পাকিস্তানের করা যুদ্ধাপরাধের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার সুস্পষ্ট জোর দাবি ওঠে।  

পুষ্পিতা গুপ্ত'র পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন রায়হান রশিদ, ইয়াসমিন সুলতানা পলিন, শাহরিয়ার বিন আলী, মেফতা ইসলাম, সুশান্ত দাস গুপ্ত এবং কাজী শামসুল হাসান শুভ। সভায় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান শরীফ, মজিবুল হক মণি, জুয়েল রাজ, সুহানা জামান, ওমর ফারুক, রাজিব আহমেদ, আতাউর রহমান, সুমন দাস, মানস হালদার সহ আওয়ামী লীগের সদস্য, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং ছাত্র-পেশাজীবী কমিউনিটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৫
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ