ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লন্ডন

লন্ডনের রেডব্রিজে আবহমান বাংলার বৈশাখী মেলা

সৈয়দ আনাস পাশা, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৬
লন্ডনের রেডব্রিজে আবহমান বাংলার বৈশাখী মেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: সাত-সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে বিদেশ বিভূইয়ে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় উৎসব লন্ডন বাংলা টাউনের বৈশাখী মেলা।

স্থানীয় সময় রোববার, ১৭ এপ্রিল বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস থেকে প্রায় ৮ মাইল দূরে বারা রেডব্রিজ টাউন হলে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
একযুগেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত বাংলা টাউনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে দেশের বাইরে সবচেয়ে বড় বর্ষবরণ উৎসব বৈশাখী মেলা।
 
ব্রিটেনসহ ইউরোপে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রাণের উৎসবটি বাংলা টাউনের ব্রিকলেন থেকে সরিয়ে ভিক্টোরিয়া পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় টাওয়ার হ্যামেলেটসের মেয়র ছিলেন লুৎফুর রহমান।

তবে বর্তমান মেয়র জন বিগস মেলাকে ফের ব্রিকলেনে (উইভার্সফিল্ড) নিয়ে আসার ঘোষণা দেন।

আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে প্রতিবছর মে মাসে মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এবার রমজান মাস থাকায় তা জুলাইয়ের  শেষের দিকে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে রোববার টাওয়ার হ্যামলেটস থেকে প্রায় আট মাইল দ‍ূরে রেডব্রিজ টাউন হলে বাঙালির এই প্রাণের উৎসবের আয়োজন করা হয়।

উৎসবে স্থানীয় দুই এমপি ওয়েজ স্ট্রিটিং, মাইক গেইপস, লন্ডন বারা অব রেডব্রিজের মেয়র বারবারা হোয়াইটস, টাওয়ার হ্যামলেটস বারার স্পিকার কাউন্সিলর আব্দুল মুকিত চুনু ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রতিনিধি মনোয়ারুল ইসলাম কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন কমিউনিটির বিশিষ্টজনেরাও।

দিনব্যাপী এই উৎসব সর্বজনীন সাংস্কৃতিক উৎসবে রূপ নেয়। সরকারি ছুটির দিন থাকায় সকাল থেকেই মেলায় বাডতে থাকে প্রবাসীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
বৈশাখী সাজে সেজে নারী-পুরুষ ও শিশুরা মেলায় অংশ নেয়। লন্ডনের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রবাসীদের ভিড়ে মেলা পরিণত হয়েছিলো মহোৎসবে।
ব্রিটেনের খ্যাতিমান শিল্পীদের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় রেডব্রিজ এলাকার উদীয়মান শিশুশিল্পীরাও।

মেলায় বিভিন্ন স্টলের পাশাপাশি ছিলো মুড়ি, মুরকি, ছানা, সন্দেশ, দই, মিষ্টিসহ নানান জাতের মুখরোচক খাবারের সমারোহ।

তরুণ রাজনীতিক শামসিয়া আলী ও সংস্কৃতি কর্মী জয়ের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মেলায় অংশ নিতে এসে স্থানীয় এমপি ওয়েজ স্ট্রিটিং বলেন,  বাংলাদেশিরা আজ ব্রিটিশ মূলধারার অন্যতম সমৃদ্ধ অংশ। বর্ষবরণের এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাজার বছরের সমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের পরিচিত হওয়ার সুযোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ উদ্যেক্তাদের।

অনুষ্ঠানের আরেক অতিথি মাইক গেইপস বলেন,  প্রতিটি সংস্কৃতিই অপশক্তির বির‍ুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ্য হতে অনুপ্রেরণা দেয়।   বাঙালি সংষ্কৃতি তেমনি একটি শক্তিশালী অনুপ্রেরণা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্যে বৈশাখী মেলা ট্রাস্টের চেয়ারপারসন সাজ্জাদুল ইসলাম শামসু ও জেনারেল সেক্রেটারি জোৎস্না ইসলাম সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

লন্ডন বারা অব রেডব্রিজে ১৫ হাজারেরও বেশি বাঙালির বসবাস। নিজস্ব বাড়ি-ঘর কিনে টাওয়ার হ্যামলেটসে ও লন্ডনের বিভিন্ন এল‍াকা থেকে সম্প্রতি এখানে এসে বসবাস শুরু করেন বাঙালিরা।
ধীরে ধীরে এখানেই তারা গড়ে তুলছেন বাংলা স্ক‍ুল, ধর্মীয় উপসানালয়, সামাজিক সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

প্রবাসে কর্ম ব্যস্ততা ও জীবন সংগ্রামে অনেকেই হাঁপিয়ে ওঠেন। বিদেশি সংস্কৃতির মধ্যে বাঙালি যখন হাবুডুবু খায় তখন নিজস্ব শেকড় সন্ধানের মধ্যে কিছুটা আত্মতৃপ্তি খুঁজে ফেরেন বাংলাদেশি প্রবাসীরা।

নতুন প্রজন্মের কাছে নিজের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার বড় মাধ্যম এই পহেলা বৈশাখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

লন্ডন এর সর্বশেষ