ঢাকা, সোমবার, ২২ পৌষ ১৪৩১, ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ রজব ১৪৪৬

মালয়েশিয়া

বর্ষবরণে চীনে ছুটছেন মালয়েশিয়ার অনেকেই

মাহমুদ খায়রুল, কুয়ালালামপুর করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
বর্ষবরণে চীনে ছুটছেন মালয়েশিয়ার অনেকেই ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুয়ালালামপুর থেকে: চীনের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে নতুন বছর। বর্ষবরণে চীনে সপ্তাহব্যাপী নানা উৎসবের আয়োজন করেছে সেখানকার মানুষ।

নতুন বছর উদযাপনকে কেউ কেউ বসন্তের উৎসবও বলে থাকেন।

মালয়েশিয়ায়ও উৎসবটি উদযাপিত হয় সাড়ম্বরে।    

undefined


মালয়েশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ চীনা সম্প্রদায়। তাদের অনেকেই বর্ষবরণ উৎসব উদযাপনে চীনে গেছেন। বাংলাদেশে ঈদ এলে যেমন ঢাকা একেবারে ফাঁকা হয়ে যায়, তেমনি চীনাদের এ উৎসবকে সামনে রেখে কুয়ালালামপুর শহরও এখন প্রায় পুরোটাই ফাঁকা।

চীন ও মালয়েশিয়ার পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও সিঙ্গাপুরেরও অন্যতম প্রধান উৎসব হল এটি। এ উৎসব উদযাপনে প্রায় সাতদিনের ছুটি কাটাতে মালয়েশিয়া থেকে নিজ নিজ দেশের বাড়িতে ফিরে যান এসব দেশের প্রবাসীরাও।

undefined


বিমানবন্দরগুলো তাই এ সময় বেশ ব্যস্ত সময় কাটায়। রেলস্টেশন ও বাস স্টেশনগুলোতেও ভিড় থাকে প্রচুর।

তবে কুয়ালালামপুরে পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে। সামনে লম্বা ছুটি থাকায় অনেক মালয় পরিবার বেড়াতে ও কুয়ালালামপুর শহর দেখতে আসছে।

প্রতি বছর এক একটি প্রাণীর নামে বছরকে সম্বোধন করেন চীনারা। যেমন- ইঁদুর, ষাঁড়, বাঘ, খরগোশ, ড্রাগন, সাপ, ঘোড়া, ভেড়া, বানর, মোরগ, কুকুর ও শুকর।

undefined


ইতিহাসের বিভিন্ন বইয়ে এই প্রাণীদের নামে বছরের নামকরণের কারণ ব্যখ্যা করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, গৌতম বুদ্ধ তার মৃত্যুর আগে সকল প্রাণী সম্প্রদায়কে ডাকেন। এ সময় মাত্র ১২ প্রজাতির প্রাণী তার ডাকে সাড়া দেয়। এরপর তিনি প্রাণীগুলোর নামানুসারে বছরের নামকরণ করেন।  
প্রাণীদের বছর চক্রের সে পরিক্রমায় নতুন বছরটিকে বানরের নামে নামকরণ করা হচ্ছে। বানর হল এ বছর চক্রের নবম প্রাণী। বানর স্বভাবে হয় বেশ চতুর, বুদ্ধিমান এবং দলনির্ভর । তাই এ বছরটি মানুষকে আরও চালাক এবং বুদ্ধিমান হবার প্রেরণা যোগানোর বছর। বানরের বৈশিষ্ট্যগুলো বহু প্রাচীন রাজাদের মাঝে দেখা যেতো বলে বানরের নামে নামকরণ করা  বছরটিকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

undefined


এটি একটি সাংস্কৃতিক উৎসব হলেও বেশিরভাগ চীনা সম্প্রদায়ের মধ্যে বেশ কিছু বিশ্বাস ধারণ করতে দেখা যায়। যেমন- বছরের প্রথমে সবাই নতুন এবং পরিষ্কার জামা পরেন, যেন সারা বছর তাদের কোনো অপরিষ্কার পোশাক পরতে না হয়। কেউ কেউ ছুরি-চাকু ব্যবহার থেকে বিরত থাকেন। তাদের বিশ্বাস, এ অভ্যাসগুলো তাদের পুরো বছরে প্রতিফলিত হবে। অনেকে সারা রাত জেগে থেকে নতুন বছরকে স্বাগত জানান।

দিবসটি উপলক্ষে চীনা সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েরা তাদের পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটান এবং পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়ে বছর শুরু করেন। মুসলমানদের ঈদের সালামির মতো তাদের রয়েছে হং বাও।

undefined


বড়দের কাছ থেকে ছোটরা লাল খামে টাকা পেয়ে থাকে। লাল রঙকে চীনা সম্প্রদায়ে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে মানা হয়। যার যতো বেশি লাল খাম, তার ততো বেশি আনন্দ।

নতুন বছরের প্রধান খাদ্যের মধ্যে থাকে বড় নুডলস, কেক, ডাম্পলিং ইত্যাদি। এ সময় ঘরে ঘরে তৈরি করা হয় স্পেশাল নুডলস। তাদের মতে নুডলস যতো লম্বা হবে তাদের আয়ুষ্কাল ততো বেশি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৬
বিএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মালয়েশিয়া এর সর্বশেষ