ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বায়তুল মোকাররম মুসল্লি কমিটির আয়োজনে ওমরাহ যাত্রায় ৩য় কাফেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০২৩
বায়তুল মোকাররম মুসল্লি কমিটির আয়োজনে ওমরাহ যাত্রায় ৩য় কাফেলা

ঢাকা: পবিত্র ভূমি সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় ওমরাহ হজ পালনে যাচ্ছেন ১০৪ জন মুসল্লি। আর নিজস্ব অর্থায়নে তাদের এ সুযোগ করে দিচ্ছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা, বাজুস প্রেসিডেন্ট ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর।

সৌদি আরবের উদ্দেশে ওমরাহ হজের তৃতীয় কাফেলা রওনা হচ্ছে বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি)। এ উপলক্ষে বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাতে তৃতীয় কাফেলার ২৭ জন মুসল্লি নিয়ে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির অফিসে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল।

অনুষ্ঠানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির সভাপতি হাজি মো. ইয়াকুব আলী এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মানিক বলেন, এর আগে রমজানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সায়েম সোবহান আনভীর ১০০ জন সামর্থ্যহীন ব্যক্তিকে ওমরাহ হজ করানোর ইচ্ছা পোষণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ তৃতীয় ধাপে ২৭ জন ওমরাহ হজের উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা করছেন।

তারা জানান, জানুয়ারির মধ্যেই সবাইকে পাঠানো হবে ওমরাহ হজের জন্য। প্রথমে ১০০ জনের কথা থাকলেও মোট ১০৪ জন ওমরাহ হজে যাচ্ছেন। তারা সেখানে ১৪ দিন অবস্থান করবেন, ওমরাহ পালন করবেন এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখবেন। তারা ওমরা হজকারীদের বলেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের এবং এ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার জন্য দোয়া করতে। তাদের প্রত্যাশা আগামীতে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

তৃতীয় কাফেলার এ ২৭ জন ওমরাহ হজযাত্রী বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) ভোর ৫টায় হযরত শাহজালার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হবেন।

দোয়া আয়োজনে ওমরাহ যাত্রা উপলক্ষে সব ওমরাহ যাত্রীকে শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় সৌজন্য উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়। এর আগে তারা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা, বাজুস প্রেসিডেন্ট ও বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। ওমরাহ পালনকালে এ ২৭ জনের যাবতীয় ব্যয় বহন করা হবে সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষ থেকে।

ওমরাহ পালনের তৃতীয় কাফেলায় আছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনের ফুটপাতের হকার মো. শাহজাহান। তিনি ওমরাহ হজ পালনের সুযোগ পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক মুসলমানের ছোট ইচ্ছা থাকে আমরা যেন পবিত্র ভূমি মক্কা-মদিনা দেখি। আমার সে সামর্থ নেই। তবে আজ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় আমি মহানবীর পবিত্রভূমিতে যেতে পারব। এ আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

বায়তুল মোকাররম এলাকার ফুটপাতের দোকানদার বাবুল বেপারি বলেন, আমি যখন আজ বাড়ি থেকে এসেছি, আমার পরিবারের লোকজন বলছিল-আজ তো আমাদের ঈদের দিন! গ্রামের লোকজন বাড়িতে এসেছে আমাকে দেখতে, যে একজন কৃষকের ছেলে ওমরায় যাচ্ছে, এটা সত্যি কি না! আমার আনন্দ আমি বলে বোঝাতে পারবো না।

ওমরায় যাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করে প্রতিবন্ধী মো. আব্দুল মান্নান বলেন, আমি যখন নবম শ্রেণিতে পড়তাম, তখন রাস্তা দিয়ে কিভাবে মক্কা-মদিনা যাওয়া যায়, তা ভাবতাম। আজ এত বছর পর আল্লাহ সে স্বপ্ন পূরণের তাওফিক দিয়েছেন। আমি প্রতিবন্ধী, কখনো ভাবিনি এ স্বপ্ন পূরণ হবে। এ ব্যবস্থা যিনি করে দিচ্ছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপক সায়েম সোবহান আনভীর, তিনি, তার পরিবার এবং ব্যবসা যেন আরও অনেক ভালো হয় এ দোয়া করি।

ওমরাহ পালনের সুযোগ পেয়ে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটির প্রধান উপদেষ্টা সায়েম সোবহান আনভীরের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান নিরাপত্তাকর্মী ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, আমার যে বেতন তাতে এখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়, ওমরাহ করা তো কল্পনার বাইরে। টাকা খরচ করে ওমরা পালনের সামর্থ্য আমার ছিল না। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের জন্য অন্তর থেকে দোয়া করি, খুবই ভালো লাগছে।

আয়োজনের শেষ অংশে সব ওমরাহ যাত্রী, এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত সবাই, বসুন্ধরা গ্রুপ, সায়েম সোবহান আনভীর ও তার পরিবারসহ দেশ ও দশের মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুসল্লি কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাসির উদ্দীন গাজী, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক নাজমুল হুদা, যুব ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক মো. জালাল সরকার, সদস্য মো. আলী আহমেদ ফেকু ও বসুন্ধরা গ্রুপের ওমরা বিষয়ক কো অর্ডিনেটর মো. আমির হোসেন মিয়া।

এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর এ ১০০ জনের মধ্যে প্রথম ২৬ জনকে ওমরাহ হজে পাঠানো হয়। তারা ওমরাহ শেষ করে সুস্থভাবে দেশে ফিরেছেন। এরপর দ্বিতীয় কাফেলায় ২৬ ডিসেম্বর ৩৩ জনকে ওমরাহ হজে পাঠানো হয় এবং তারা বর্তমানে মক্কা-মদিনাতে অবস্থান করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি, ২০২৩
এইচএমএস/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।