নড়াইল: সড়ক প্রতি বাস থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগে দুই শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার এ দুই শ্রমিকের মুক্তির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন নড়াইল আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন।
শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে এই ধর্মঘটের ডাক দেন নেতারা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
সকাল থেকে আন্তঃজেলাসহ দূর পাল্লার কোনো পরিবহন নড়াইল থেকে ছেড়ে যায়নি এবং অন্য জেলা থেকে কোনো বাস নড়াইলে প্রবেশ করেনি। ফলে দূর পাল্লার যাত্রীদের পাশাপশি, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, মাগুরাসহ নড়াইলের আশপাশের গন্তব্যে বের হওয়া যাত্রীরা পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজি, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে ছুটছেন যাত্রীরা।
পুলিশ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, নড়াইল শহরের নতুন টার্মিনাল এলাকায় শ্রমিক কল্যান তহবিলের নামে বাস প্রতি ৩০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে চাঁদা তোলার সময় শ্রমিক ইউনিয়নের কার্ডধারী খোকন বিশ্বাস ও সাকিব নামে দুই শ্রমিককে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল তাদের গ্রেফতার করে।
পরে তাদের মুক্ত করতে রাতেই বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বেশ কয়েক দফায় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু পুলিশ তাদের ছাড়েনি। পরে আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ বৈঠকের পর আটক শ্রমিকদের মুক্তির দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন।
নড়াইল জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বিলো বাংলানিউজকে বলেন, মালিকদের অনুমতিতেই নির্দিষ্ট একটি যায়গায় আমাদের কার্ডধারী শ্রমিকরা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের জন্য বাস প্রতি ৩০ টাকা করে আদায় করে। দেশের প্রত্যেক জেলায়ই নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া আমরা তো জোর করে আদায় করছিনা, বাস মালিকরা দিচ্ছে আমাদের তহবিলে।
পরিবহন ধর্মঘট সম্পর্কে তিনি বলেন, জেলায় দূরপাল্লার গাড়ি ও আন্তঃজেলার বাসগুলো মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের যৌথ সিদ্ধান্তে বন্ধ করা হয়েছে। তবে পিকনিকের বাস বা রিজার্ভ বাসগুলো আমরা চলাচলে বাধা দিচ্ছিনা। তবে আটক শ্রমিকদের মুক্তি না দিলে কাল থেকে সব ধরণের গাড়ি চলাচল রাস্তায় বন্ধ থাকবে এবং এই আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে।
যশোর হাসপাতালে ভর্তি শ্বাশুড়ীকে দেখতে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে নড়াইলের মুচিপোল এলাকায় এসে বিপাকে পড়া সুমঙ্গল বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, বাস বন্ধের বিষয়ে কিছুই জানতাম না। বাড়ি থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তা ভ্যানে এসেছি। এখন শুনছি বাস ধর্মঘট। বাস ছাড়া বাচ্চা কাচ্চা ও ব্যাগ নিয়ে অটো রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। অর্থের পাশাপাশি সময়ও নষ্ট হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে চাঁদাবাজি করছিলেন তারা। অন্যায় আবদার পূরণে সড়কে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে প্রশাসন শক্ত অবস্থানে যেতে বাধ্য হবে। সড়কে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩
এসএম