ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নিজের এনআইডিতে অন্যের ছবি, ভোগান্তির শেষ নেই সামছুল হকের

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৩
নিজের এনআইডিতে অন্যের ছবি, ভোগান্তির শেষ নেই সামছুল হকের ছবি: সামছুল হকের এনআইডি 

জয়পুরহাট: ২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পান সামছুল হক (৬৪)। নাম-ঠিকানা সব ঠিক থাকলেও ছবির জায়গায় এসে বাধে গণ্ডগোল।

তার ছবির জায়গায় অন্য জনের ছবি।  

এরপর জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবিটি পরিবর্তনের জন্য নির্বাচন অফিস ও জনপ্রতিনিধির কাছে ধরনা দেন। তবে কোনো সুরাহা হয়নি। এই পরিচয়পত্র দিয়ে বিভিন্ন সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়ছেন তিনি। এমনকি নির্বাচনে নিজের ভোটও দিতে পারছেন না।

সামছুল হক (৬৪) জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বীরনগর আটুল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষিকাজের পাশাপাশি ছোট মুদি দোকান চালান।  

রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন অফিসে এসেছিলেন মো. সামছুল হক। এদিনও তাকে শুকনা মুখে বাড়ি ফিরে যেতে হয়েছে।

মো. সামছুল হক বলেন, ২০০৮ সালে যখন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হাতে পান, তখন সেখানে সব সঠিক থাকলেও ছবি ভুল ছিল। তার ছবির স্থানে এলাকার দেবখণ্ডা দিঘির পাড় আদর্শ গ্রামের মো. তহির উদ্দিনের ছবি ছিল। আর তহিরের এনআইডিতে সামছুলের ছবি। এ নিয়ে ভোট দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন। তখন তহির ও তিনি একসঙ্গে যাওয়ায় ভোট দিতে দেওয়া হয়েছিল।

গুরুত্বপূর্ণ ২২ ধরনের সেবার ক্ষেত্রে এখন জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার পড়ে। এসবের কিছুই পাচ্ছেন না সামছুল হক। তিনি বলেন, ২০১৮ সালে ছবি পরিবর্তনের আবেদন করেছিলেন। এরপর কোনো কাজ হয়নি। প্রায় এক বছর আগে দেবখণ্ডা দিঘির পাড় আদর্শ গ্রামের মো. তহির উদ্দিন মারা যান। তখন সামছুল হককেও জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত দেখানো হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আবেদন করেন। এই আবেদনের পর তাকে ‘মৃত’ থেকে জীবিত দেখানো হয়। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি এনআইডির ছবি পরিবর্তনের জন্য আবার আবেদন করেন। এর আগে ২০১৪ সালে সামছুল হক নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ছবিও তুলেছিলেন।

সামছুল হক বলেন, ‘আমি নিজে এতটা বুঝি না। ২০০৮ সালের পর থেকে ছবি পরিবর্তনের জন্য যে যেভাবে বলেছেন, সেভাবেই চেষ্টা করেছেন। এখনো ছবি পরিবর্তনের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। দীর্ঘদিনের এই সময়ে আমি কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। জমি কেনা, ব্যাংক ঋণ নেওয়া, মোবাইল সিম তোলাসহ নানা কাজে গিয়ে আমি ঘুরে এসেছি। এবার ছবি পরিবর্তন না হলে আর কখনো চেষ্টা করব না। ’

জানতে চাইলে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, এনআইডিতে মৃতের যে বিষয়টি ছিল, তা সংশোধন করা হয়েছে। এখন ছবি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা আছে। এটি ঢাকা কার্যালয় থেকে যাচাইয়ের জন্য ক্যাটাগরি করে জেলা নির্বাচন কার্যালয় বা বিভাগীয় কার্যালয়ে দেবে। এরপর যাচাই করে ছবি পরিবর্তন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।