ফেনী: দেশের যেকোনো সময়ের চেয়ে মুরগির বাজার বর্তমানে চড়া। দেশি-সোনালি-ব্রয়লার মুরগির দাম চলে যাচ্ছে গরিবের হাতের নাগালের বাইরে।
স্থানীয় বাজারগুলো পর্যবেক্ষণ করে এ চিত্র সামনে এসেছে। জানা গেছে, ফেনী শহরে গরু, মহিষ-খাসিসহ অন্যান্য মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে পৌরসভা। কিন্তু অস্থিতিশীল মুরগির বাজার। শুক্রবার (২৪ মার্চ) প্রথম রোজার দিন শহরের বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়। অথচ বৃহস্পতিবার সারাদিন এ জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকায়।
২০২২ সালের অক্টোবরে ফেনীর বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়েছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে এ জাতীয় মুরগি কেনা যেত ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। কিন্তু রোজার আগে থেকেই মুরগির বাজারে আগুন লাগে। ৭৯ শতাংশ বেড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ২৬০ টাকা ছুঁয়েছে। সে হিসেবে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ১২০ টাকার মতো বেড়েছে।
দাম বেড়ে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩৩০ টাকা। অথচ দুই সপ্তাহ আগেও এ জাতের মুরগি বাজারে পাওয়া যেত ২৬০ টাকায়। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫২০ টাকা কেজি দরে।
দামের জোরে পিছিয়ে নেই মুরগির ডিমও। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে ২০২২ সালের এ সময়ের তুলনায় ডিমের দাম এখন ২৩ শতাংশ বেশি।
এ অবস্থায় ফেনীর আকাশে ব্রয়লার উড়ছে, দেশি-সোনালি যেন সোনার টুকরা বলে মন্তব্য করছেন সাধারণ ক্রেতারা। জসিম উদ্দিন নামে মহীপাল বাজারে আসা এক ক্রেতা বলেছেন, আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এতো দাম দিয়ে মুরগি কেনা কষ্টকর। তাই সবজি ও মাছেই ভরসা।
মুরগির দাম নির্ধারণ প্রসঙ্গে পৌর কাউন্সিলর ও বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য আশরাফুল আলম বলেন, রোজার আগে মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রণে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। তবে সেদিক থেকে মুরগির বাজারমূল্য স্থিতিশীল নয়। যেকোনো সময় দাম ওঠানামা করে। এজন্য মুরগির দাম নির্ধারণের সুযোগ নেই।
ব্রয়লার মুরগির দাম রেকর্ড করেছে উল্লেখ করে শহরের মহীপাল বাজারের ব্যবসায়ী আজগর আলী বলেন, ব্রয়লার মুরগি এর আগে কখনোই এতো দামে কেনাবেচা হয়নি। দাম বাড়লেও আমাদের খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের তেমন কিছু করার থাকে না। তবে গত কিছুদিন ধরে দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রয়ও কমে গেছে।
উৎপাদন খরচের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে খামারিদেরও। তারা বলছেন, মুরগির খাবারের পাশাপাশি ঔষধপত্রের দাম ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে তাদের সমস্যা হচ্ছে। আশিকুর রহমান নামের এক খামারি বলেন, মানুষ শুধু মুরগির দাম বেড়েছে এটাই দেখছে। কিন্তু মুরগির খাবারসহ আনুষঙ্গিক অনেক কিছুর দাম যে কয়েকগুণ বেড়েছে তা আর কেউ দেখছে না। সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সঙ্গত কারণেই মুরগির দাম বেশি নিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২৩
এসএইচডি/এমজে