ঠাকুরগাঁও: বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের ছোট পলাশবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম। ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
কিন্তু কেন দবিরুলের এমন ইচ্ছা? জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধার বহর দেখে তিনি অপমানিত হয়েছেন। মৃত্যুর পরও তাই অপমান হতে চান না। যে কারণেই এ সিদ্ধান্ত।
জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি যে চিঠি দিয়েছেন তাতে লিখেছেন- ‘মুক্তিযোদ্ধার বহর দেখে চেতন মুক্তিযোদ্ধারা দুঃখিত, ব্যথিত, লজ্জিত ও অপমানিত। মৃত্যুর পর আর অপমানিত হইতে চাই না। আমাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করবেন না। ’
এ ব্যাপারে কথা হলে বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম জানান, জাতির পিতার ডাকে সাত দিন বয়সী মেয়েকে ঘরে রেখে পরিবারের চিন্তা বাদ দিয়ে তিনি যুদ্ধে চলে যান। মনে বাসনা ছিল দেশকে মুক্ত করতে হবে। স্বাধীনতার পর তার উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১৭৩ জন। এখন প্রতিবছরই তাদের গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা বাড়ে। বাড়তে বাড়তে তিন শতাধিক পার হয়ে গেছে। যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি তারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার লাইসেন্স করে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। মারা যাওয়ার পর তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হচ্ছে।
এই বিষয়টিই মুক্তির জন্য যুদ্ধ করা দবিরুলের কাছে অপমানজনক। তাই তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন যেন মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা না হয়।
স্বাধীনতা যুদ্ধের এ সমরের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর-৮৯৭, এফ এফ নম্বর-২০৭৭, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-০৩১০০৩০০৬০। বাবার নাম সফিজ উদ্দীন (মৃত)।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করতে চাই, দেশে অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরি হয়েছে। তাদেরকে সঠিকভাবে তদন্ত করা হোক। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীসহ আরও গোয়েন্দা সংস্থার জনবল দিয়ে তাদের তদন্ত করুন। তারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কিনা তা বের করে নিয়ে আসুন। তবে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত বোধ করবেন।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এমন একটি আবেদন আমরা পেয়েছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় দাফন এটি রাষ্ট্রের নিয়ম। কী কারণে তিনি সেটি চান না সে বিষয়ে আমরা তার সঙ্গে কথা বলব।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২৩
এমজে