নাটোর : ‘সবাই ভালো থেকো, আমিও ভালো থাকবো ওপারে’- নিজের ফেসবুক পেজে এমন আবেগঘন পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেছে নাটোরের গুরুদাসপুরের এক শিক্ষার্থী।
তার নাম মো. রঞ্জু আহমেদ (১৬)।
রোববার (২৬ মার্চ) দিনগত রাত ১টার সময় ফেসবুকে লাইভে এসে আত্মহত্যা করে রঞ্জু।
তার আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
কী কারণে রঞ্জু আত্মহননের পথ বেছে নিল তার কারণ জানা যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করতে স্বজনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার কোনো তথ্য এখনও অবগত নন বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নই আমি। কেউ এব্যাপারে কিছু জানাননি। তবে স্কুলশিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা সঠিক হলে এর কারণ উদঘাটনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার (২৭ মার্চ) ভোর ৪টার সময় স্থানীয় অনলাইন চলনবিল টিভিতে এ আত্মহত্যা সংক্রান্ত একটি লাইভ দেখানো হয়। তাতে দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থী ঘরের আড়ার সঙ্গে দড়ি বেঁধে চেয়ারে উঠে আত্মহত্যা করে। সে সময় আশপাশে কেউ ছিল না। আত্মহত্যা ঘটনার ৯ মিনিটের মাথায় স্বজনরা টের পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করেন এবং রঞ্জুর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
এসময় তাদের কান্না আর ডাকচিৎকারে লোকজন ছুটে আসে এবং আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
চলনবিল টিভির উপস্থাপক নাজমুল হাসান নাহিদ আত্মহত্যার বিষয়টি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, রাত ১টার দিকে ফেসবুকে এসে ওই শিক্ষার্থী যখন আত্মহত্যার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তখনই শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুরা অনেকে টের পেয়ে তাকে আত্মহত্যা না করতে অনুরোধ জানিছিল। অনেকে মন্তব্যও লিখেছেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। সে সময় পরিবারের লোকজনও ঘুমিয়ে থাকার কারণে কেউ টের পায়নি।
এদিকে রঞ্জুর ফেসবুক পেজে আরও দুটি স্ট্যাটাস রয়েছে। আত্মহত্যার ৫ ঘণ্টা আগে সে লিখে যায় - ‘মৃত্যু শেষ আয়োজন এবং শেষ ঠিকানা! কখন জানি মৃত্যু এসে বলবে, চলো এবার যাওয়া যাক। জিন্দা থাকলে তো নিন্দা হবেই, সাদা কাপড়ে জড়িয়ে গেলে ভালবাসার মানুষের অভাব হয় না। সময় যখন থমকে যাবে, শেষ হবে সফর! বিদায় দেবে বন্ধু স্বজন, স্বাগত জানাবে পরপার। ’
বাবাকে উদ্দেশ্য করে সে লিখেছে - ‘স্যরি বাবা কত কষ্ট দিয়েছি আপনাকে, হয়তো আমাকে নিয়ে আপনার অনেক স্বপ্ন ছিল। ’
বাংলাদেশ সময় : ০৭২০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
এসএএইচ