ঢাকা: তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য ব্যাহত করতে তামাক কোম্পানিগুলো তরুণদের আসক্ত করতে বিভিন্ন কূটকৌশল প্রয়োগ করে দেশে ই-সিগারেটের বাজার দ্রুত সম্প্রসারণ করছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সেমিনারে এ সংক্রান্ত একটি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
ফলাফল বলা হয়, ২০১২ সালে বাংলাদেশে প্রথম ই-সিগারেট আগমনের পর প্রথম ৪/৫ বছর পর্যন্ত কেবলই রাজধানীর কিছু অভিজাত এলাকায় ই-সিগারেটের অল্প কিছু দোকান ছিল। ই-স্মোকারের সংখ্যাও তখন খুবই কম ছিল। এখন সারাদেশে ই-সিগারেট পাওয়া যায়। জ্যামিতিক হারে আশংকাজনকভাবে বাড়ছে ই-স্মোকারের সংখ্যা ও ই-সিগারেটের ব্যবহার।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে চালু হয়েছে এবং এখনো ই-সিগারেট বিক্রি করছে, এমন দোকানের সংখ্যা ২২ শতাংশ। বাকি ৭৮ শতাংশ ই-সিগারেটের দোকান ২০১৬ সালের পর (২০১৭-২০২১) পাঁচ বছরের মধ্যে চালু হয়। মাত্র পাঁচ বছরে কয়েকটি ড্যাপিং শপ বৃদ্ধি পেলেও পুরাতন দোকানগুলোর বিক্রি কমেনি; বরং নতুন ও পুরাতন দোকানগুলোতে দিন দিন বিক্রি বাড়ছে। মাত্র কয়েক বছরে বেশির ভাগ ই-সিগারেটের দোকান চালু হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ই-সিগারেট খুবই দ্রুত ও আশংকাজনক হারে বিস্তারের প্রমাণবহ। তামাক কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন কূটকৌশলের কারণে বাংলাদেশে ই-সিগারেটের ব্যবহার ও নতুন এই তামাক পণ্যের বাজার জ্যামিতিক হারে বিস্তৃত হচ্ছে।
আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে এই গবেষণায়। ই-সিগারেটের বাজার সম্প্রসারণ রোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) অধীনে একটি পৃথক বিভাগ গঠনেরও সুপারিশ করা হয়।
ইন্টার প্রেস নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক মো. গোলাম মাওলার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্যানেল আলোচক ছিলেন মানসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বারডেমের ডেন্টাল বিভাগের প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দীন ফারুক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, দ্য ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞাপন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
বাংলাদেশে নতুন পণ্য বিস্তারে তামাক শিল্পের কূটকৌশল শীর্ষক গবেষণাটি যৌথভাবে সম্পাদন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক ও গণমাধ্যমকর্মী এহসানুল হক জসীম এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক সৈয়দ সাইফুল আলম। ছয় মাসব্যাপী মাঠ পর্যায়ের এই গবেষণাটি পরিচালিত হয় ২০২২ সালে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২৩
এসএমএকে/এসআইএ