ঢাকা: বন্যা মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের মোবাইল ফোনে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বুধবার (৫ এপ্রিল) ‘স্থানীয় পর্যায়ে বন্যার সতর্কবার্তা ও প্রচার ব্যবস্থার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের বার্ষিক অগ্রগতি অবহিতকরণ কর্মশলা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ডাটাবেজ পোর্টাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যার ঝুঁকি মোকাবিলায় এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সক্ষমতা ও সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। টেকসই অবকাঠামো ও জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দেশের বন্যাপ্রবণ উত্তরাঞ্চলের ৩টি জেলার (কুড়িগ্রাম,গাইবান্ধা ও জামালপুর) ১৯টি উপজেলায় বিশেষ কার্যক্রম ও প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যা মৌসুমে এসব এলাকার বাসিন্দাদের মোবাইল ফোনে ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে বন্যার আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হবে। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে জনগণ এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থা আরও ভালোভাবে দুর্যোগের পূর্বপ্রস্তুতি নিতে পারবে। এতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস পাবে এবং প্রকল্প এলাকার সকলেই উপকৃত হবে।
তিনি আরও বলেন, ভৌগলিক অবস্থান ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমাদের দেশটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে প্রতিরোধ বা নিমূর্ল করা সম্ভব নয়। তাই দুর্যোগ ঝুঁকি কমিয়ে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসাই সরকারের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পর দুর্যোগে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জনগণকে সম্পৃক্ত করে জনবান্ধব, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসমূলক কর্মসূচির প্রচলন করেছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে। জাতীয় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে এখন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। জনসেবায় অবদান রাখার জন্য জাতিসংঘের সম্মানজনক জনসেবা পদক ২০২১ অর্জন করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয়।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা হতে মানুষের জানমাল রক্ষার্থে মাটির কিল্লা নির্মাণ করা হয়, যা সর্ব সাধারণের কাছে মুজিব কিল্লা নামে পরিচিত । তারই আধুনিক রূপে উপকূলীয় ও বন্যাপ্রবণ ১৪৮টি উপজেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। উপকূলীয় দুর্গত জনগণ যেমন সেখানে আশ্রয় নিতে পারবে তেমনি তাদের প্রাণিসম্পদকে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারবে।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী দেশের সকল জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য অনলাইন পোর্টাল উদ্বোধন করেন। এর ফলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিসমূহের তথ্য খুব সহজেই হালনাগাদ করা যাবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী সেখ মো. মহসিন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আমিরুল হক ভুঁইয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২৩
এসসি/এসএ