ঢাকা: রাজধানীতে উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে বর্ষবরণের নানা অনুষ্ঠান। এসব অনুষ্ঠানস্থলে কড়া নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মূল অনুষ্ঠানস্থল রমনা বটমূলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নিতে শুক্রবার সকাল থেকে বৈশাখী সাজে আসতে শুরু করেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ। সবাইকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ পুরো এলাকায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান চলছে। এই এলাকায় যানবাহনের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীরা হেঁটে চলাচল করছেন।
অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। র্যাব-পুলিশের টহল চেকপোস্ট ও অবজারভেশন পোস্টের মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর কাকরাইল থেকে সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে যান চলাচলের জন্য রয়েছে ডাইভারসন ব্যবস্থা। কাকরাইল থেকে মৎস্যভবনে এসে দেখা যায় পুলিশের ব্যারিকেড।
মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ হয়ে সম্পূর্ণ সড়কে দর্শনার্থীরা হেঁটে চলাচল করছেন। তবে এদিকে শাহবাগ থেকে বাংলামোটরের দিকের সড়কেও বন্ধ রাখা হয়েছে যানবাহনের চলাচল।
ইউনিফর্মে র্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা সব অনুষ্ঠানস্থলে নজরদারি করছেন।
সব অনুষ্ঠানস্থলের সামনেই র্যাব-পুলিশের একাধিক টহল টিম থাকতে দেখা গেছে। রমনা লেকে পুলিশ ও র্যাবের বোট টহল চলতে দেখা গেছে। নারীদের ইভটিজিং প্রতিরোধে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ ব্যবস্থা।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বাংলানিউজকে বলেন, রাজধানীসহ সারাদেশে নববর্ষের উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র্যাবের স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, মোটরসাইকেল পেট্রোল, বোট পেট্রোল ও সিসিটিভি মনিটরিং রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় র্যাবের রিজার্ভ ফোর্স মোতায়েন রয়েছে, প্রস্তুত রয়েছে র্যাবের স্পেশাল কমান্ডো টিম। নাশকতার ঘটনা মোকাবিলায় টহল ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে ।
তিনি বলেন, র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার মনিটরিং বাড়ানোর মাধ্যমে জঙ্গিদের যেকোনো নাশকতার পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে র্যাব প্রস্তুত রয়েছে। ভার্চুয়াল জগতে নববর্ষকে কেন্দ্র করে গুজব ঠেকাতে আমাদের সাইবার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
অন্যান্য বারের মতো এবারো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রার র্যালি বের হয়। র্যালির একেবারে সামনে ছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) সোয়াত টিম, এরপরে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। র্যালির নিরাপত্তায় আকাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ড্রোন ক্যামেরা উড়তে দেখা যায়। ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে সম্পূর্ণ র্যালি পর্যবেক্ষণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মঙ্গল শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে বের হয়ে শাহবাগ মোড় হয়ে ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলা অনুষদে ফিরে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ মোড়ে, ফুল মার্কেটের সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। মঙ্গল শোভাযাত্রার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকধারী সদস্যদের সঙ্গে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও নজরদারির দায়িত্বে ছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। ইউনিফর্মে ও সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা সদস্যরা পুরো অনুষ্ঠানস্থলে নজরদারি করছেন।
অনুষ্ঠানস্থলে আসা সবার নিরাপত্তায় ডিএমপির সদস্যরা কাজ করছেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৩
এসজেএ/আরএইচ