মাদারীপুর: মাদারীপুরে গরমের তীব্রতা বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিং।
জানা গেছে, গরম বাড়ার পর থেকেই মাদারীপুরে লোডশেডিং বাড়তে শুরু করে। গত কয়েকদিন ধরে রাতে নিয়ম করে বিদ্যুৎ থাকছে না। গত সপ্তাহে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখেছে জেলার মানুষ।
এ অবস্থায় জেলার গ্রাম থেকে শহর সর্বত্রই দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাতে নির্ঘুম কাটাচ্ছেন লোকজন। রাতে তিন-চারবার করে বিদ্যুৎ যায়। এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় ধরে বিদ্যুৎ থাকছে না। হাসপাতালের রোগীরাও চরম কষ্ট পাচ্ছেন। স্বাভাবিক কাজ-কর্ম ব্যাহত হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও।
মো. সাগর হোসেন নামে জেলার এক বাসিন্দা বলেন, গত কয়েকদিন ধরে রাতে ঠিকমত ঘুমান যাচ্ছে না। সন্ধ্যা রাতেও বিদ্যুৎ থাকে না। আবার ১২টা-১টার দিকে চলে যায়। একবার এলেও সাহরির পর চলে যায়। দিনেও নিয়ম করে লোডশেডিং হয়। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এ অবস্থায় সরকারের কাছে দাবি, জনগণের অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হোক।
বিদ্যুৎ ঠিক মতো না থাকায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরাও। ঈদের সময় হওয়ায় সব ধরনের পণ্যের বাজারে ভিড় বেশি। কিন্তু তীব্র গরমে ক্রেতা পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। আবার ভিড় হলেও লোডশেডিংয়ের কারণে বিক্রেতারা ব্যবসা করতে পারছেন না। গরমে অসহায় হয়ে পড়ছেন উভয়ই। বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে কেনা-কাটাও বন্ধ হয়ে যায় অনেকের।
মাদারীপুর শহরের পুরানবাজারের ব্যবসায়ী আসাদ রহমান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। একটি কাজ অর্ধেক থাকতেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে, এতে আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কেন এমন বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো ঘোষণা বা বার্তা দিচ্ছে না বিদ্যুৎ বিভাগ।
জেলার কয়েকটি হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় রোগীদের অবস্থায় শোচনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। প্রচণ্ডে গরমে স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরও বাড়ছে। রোগীরও একই তথ্য জানিয়েছেন।
মাদারীপুর বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ৩৩ হাজার গ্রাহকের ষোল মেগাওয়াটের বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১২ মেগাওয়াট। অপরদিকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩ লাখ ৬৫ হাজার গ্রাহকের ৭৫ মেগাওয়াটের বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৫৫ মেগাওয়াট। যে কারণে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
ওজোপাডিকোর মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, সারা দেশেই লোডশেডিং হচ্ছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে ধারণা করছি। অতিরিক্ত গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ। যে কারণেই এ সংকট দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৩
এমজে