ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য কমলাপুরে যাত্রীদের ভিড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য কমলাপুরে যাত্রীদের ভিড়

ঢাকা: অনলাইনে ট্রেনের শতভাগ টিকিট বিক্রির কারণে এবার ঈদযাত্রায় চিরচেনা ভিড় নেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। টিকিট ছাড়া প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে না পারায় অন্যান্যবারের মতো সেখানে যাত্রীর অতিরিক্ত চাপ নেই।

তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে কাউন্টারগুলোতে। স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন ঘরমুখো যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য কাউন্টারগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কেউ টিকিট পাচ্ছেন, কেউ পাচ্ছেন না। তীব্র গরমের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। তারপরও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে কষ্ট সহ্য করে দাঁড়িয়ে আছেন তারা।

স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা এসব যাত্রীদের বেশিরভাগই বেসরকারি চাকরিজীবী বা তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন কারখানার শ্রমিক। সরকারি চাকরিজীবীদের ঈদের ছুটি বুধবার (১৯ এপ্রিল) থেকে শুরু হলেও বেসরকারি খাতে কাজ করা এসব শ্রমজীবীদের ছুটি শুরু হবে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) থেকে। তাই বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) অফিস বা কাজ শেষে বাড়ির পথ ধরছেন তারা।

এদিকে কালোবাজারি বন্ধ করতে এবার ট্রেনের আগাম টিকিটের শতভাগ বিক্রি করা হয় অনলাইনে। পাশাপাশি যাত্রার দিন প্রতিটি ট্রেনে আসন সংখ্যার ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়। শ্রমজীবীদের বেশরভাগই অনলাইনে টিকিট কাটতে না পারায় স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য কাউন্টারগুলোতে লাইন ধরছেন। তবে চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত স্ট্যান্ডিং টিকিট না থাকায় ফিরে যেতে হচ্ছে বেশিরভাগ যাত্রীকে।

স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য কমলাপুরে কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ওবায়দুর রহমান। নারায়ণগঞ্জে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা এ যাত্রী পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাবেন সিরাজগঞ্জ। তিনি বলেন, আমরা অশিক্ষিত মানুষ, অনলাইনে টিকিট কাটতে পারিনি। শুনেছি ট্রেন ছাড়ার আগে স্ট্যান্ডিং টিকিট দেয়। তাই লাইনে দাঁড়িয়েছি। আধা ঘণ্টা হয়েছে এখনও টিকিট পাইনি। স্ট্যান্ডিং টিকিট পেলে তো ভালো, না হলে বাসেই যেতে হবে।

দিনাজপুরের ট্রেনের জন্য প্রায় ৪৫ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ইজি ফ্যাশনের কর্মচারী মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন, রাস্তায় যে জ্যাম, তাতে বাসে করে বাড়ি যেতে খুবই কষ্ট হয়। চেষ্টা করছি একটি স্ট্যান্ডিং টিকিট পাওয়ার। ট্রেনে দাঁড়িয়ে গেলেও তুলনামূলক কষ্ট কম হবে।

শরীফুল ইসলাম নামে আরেক টিকিটপ্রত্যাশী বলেন, কবে বন্ধ পাব তা জানতাম না, তাই অনলাইনে টিকিট কাটিনি। এখন স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য যাত্রীদের যে চাপ, আদৌ পাব কি না জানি না।

এদিকে বিপুল সংখ্যক টিকিটপ্রত্যাশীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিরাপত্তাকর্মীদের। তারা কিছুক্ষণ পর পরই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অতিরিক্ত যাত্রীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আসন সংখ্যার বিপরীতে ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট দিচ্ছি। এতে এক একটি ট্রেনে হয়তো ১৫০ জন দাঁড়িয়ে যেতে পারবে। কিন্তু লাইনে দাঁড়াচ্ছে ৫০০ থেকে এক হাজার মানুষ। আমরা চাপ সামলানোর চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
এসসি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।