ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আতর-টুপি-জায়নামাজের দোকানে ভিড়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
আতর-টুপি-জায়নামাজের দোকানে ভিড় পছন্দের টুপি দেখছেন মুসল্লিরা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। রাজধানীসহ দেশবাসীর ঈদের কেনাকাটা প্রায় শেষের দিকে।

ঈদে নতুন কাপড়ের সঙ্গে টুপি, জায়নামাজ ও সুগন্ধি আতরের চাহিদাও কম নয়। তাই নতুন টুপি, আতর, জায়নামাজ, তসবিহর দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, বিক্রি গতবারের চেয়ে কমেছে।

এদিকে আমদানি ব্যয় বাড়ায় প্রভাব পড়েছে সুগন্ধির দামে। জায়নামাজের বাজারে চীন ও তুরস্কের আধিপত্য। এলসি বিড়ম্বনা ও ডলারের বিনিময় মূল্য বাড়ায় আমদানিকৃত এসব পণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানা গেছে। বিক্রেতাদের দাবি, মজুরি খরচের পাশাপাশি বেড়েছে সুতার দামও। ডলারের দাম বাড়ায় বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত টুপির দামও বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি।

বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট, জিপিও সংলগ্ন ফুটপাত, গুলিস্তান, নিউমার্কেট, চকবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দারুণ জমে উঠেছে আতর, টুপি ও জায়নামাজের বেচাকেনা। আকর্ষণীয় নকশা আর বিভিন্ন কারুকার্যে সুসজ্জিত টুপির প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। দেশি টুপির পাশাপাশি বাহারি নকশা আর আকৃতির বিদেশি টুপিও পাওয়া যাচ্ছে এসব দোকানে। নকশার সঙ্গে মিল রেখে এসব টুপির চমকপ্রদ সব নাম দিয়েছেন বিক্রেতারা। কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, কাজ ও মানভেদে দেশি টুপির দাম পড়বে ৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। তবে একটু বেশি ভালো মানের টুপির দাম পড়বে ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

এছাড়া পেশোয়ারি, সোলেমানি, রুমি, ওমানি, মিসরীয়, মুম্বাই, আফগান, পাকিস্তানি টুপি পাওয়া যাচ্ছে এসব দোকানগুলোতে। এরমধ্যে চীনা টুপি ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাকিস্তানি টুপি ১৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, ভারতীয় টুপি ৮০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে চীনের ওয়ানি ৬৫০ টাকায়, ভারতের গুজরাটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়, সিডনি ৪০০ টাকা, পাঠান ৪৫০ টাকা এবং ছোট পুতির সঙ্গে সোনালি কাজ করা প্রতিটি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়া নেটের তৈরি চীনা টুপি ১৫০ টাকা ও তুর্কির টুপি ৫০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছে দোকানিরা।

বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেটের টুপি বিক্রেতা আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, রোজার শুরুতে ও শেষের দিকে টুপি বিক্রি ভালো হয়। এ সময়টায় ভালো লাভ হয়। ঈদবাজারে নিজের চাহিদা অনুসারে এসব পণ্য কিনতে পারায় খুশি হন ক্রেতারা।

বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে টুপি ও জায়নামাজ কিনতে আসা জাহিদ হোসেন বলেন, গ্রামের বাড়িতে ঈদ করব। তাই নিজের এবং বাড়ির অন্যদের জন্য টুপি কিনেছি। তবে এবার দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে।

টুপির পর ঈদের অন্যতম প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ আতর। হালকা, মৃদু ও কড়া এ তিন ধরনের আতর পাওয়া যাচ্ছে এবারে ঈদবাজারে। কারও পছন্দ হালকা সুগন্ধ, কারও বা কড়া। কেউ কেউ বেছে নেন দুটির মাঝামাঝি মৃদু সুগন্ধ। কম বয়সীরা একটু হালকা সুগন্ধির প্রতি আকৃষ্ট হলেও বেশি বয়সীদের পছন্দ কড়া সুগন্ধ। দোকানে দেশি, পাকিস্তানি, ভারতীয়, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের আতরই বেশি পাওয়া যায়। এসব আতরের যেমন সুগন্ধ, তেমনি বাহারি নামেরও। জান্নাতুল মাওয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস, হাজরে আসওয়াদ, সুলতান, উদ, আল হারমাইন শেখ, কস্তুরি, আল ফারেজ, আলিফ, মেশক আম্বার ইত্যাদি। ছোট, বড় ও মাঝারি বিভিন্ন আকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্যের কাচের বোতলে আতর কিনতে পাওয়া যাবে। প্রকারভেদে এগুলোর দাম পড়বে ১০০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বায়তুল মোকাররম মসজিদ মার্কেট থেকে আতর কিনছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম।  

তিনি বলেন, ঈদের দিন বিশেষ দিন। আর ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী আতর ব্যবহার করা সুন্নত। এ কারণেই আতর কেনা। এক দোকানে সবচেয়ে ভালো মানের আতর চাইতেই সৌদি আরবের ‘উদ’ আতরের ছোট্ট শিশি হাতে তুলে দিলেন দোকানি। দাম হাঁকালেন এক তোলা ২০ হাজার টাকা। দোকানদার নাজমুল হাসানের দাবি ‘উদ’ এবারের ঈদে আসা সবচেয়ে ভালো আতর।

এদিকে বৈচিত্র্যময় নকশা ও ম্যাটেরিয়ালের জায়নামাজে ভরপুর এখনকার দোকান। সুতি, মখমল, সিলিকন, পশমিসহ বিভিন্ন রকম জায়নামাজ পাওয়া যাচ্ছে মার্কেটে। ক্রেতাদের মধ্যে নকশা করা জায়নামাজের চাহিদাই বেশি। তবে নকশা ছাড়া জায়নামাজও কিনছেন অনেকেই। জায়নামাজের দাম নির্ভর করে ম্যাটেরিয়াল ও নকশার ওপর। বাংলাদেশ ছাড়াও পাকিস্তান, কাশ্মীর, বেলজিয়াম, চীন, সৌদি আরব ও কাতারের জায়নামাজ কিনতে পারবেন। দাম পড়বে ১২০ থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া কাঠ, প্লাস্টিক, মুক্তা, পাথর, হাতির দাঁত, হরিণের শিং, ক্রিস্টালসহ বিভিন্ন উপাদানে তৈরি তসবিহ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। ২৫ গুটি, ৫০ গুটি থেকে শুরু করে ১০০, ২০০, ২৫০ এবং সর্বোচ্চ ৫০০ গুটির তসবিহ পাওয়া যায় বাজারে। আবার ডিজিটাল তসবিহরও বেশ কদর এখন। দাম ৫০ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
এইচএমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।