ফরিদপুর: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বিএসডাঙ্গীতে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের সামনের গুরত্বপূর্ণ একটি স্লাব ও পানির লাইন গত এক বছরের বেশি সময় ধরে ভেঙে পড়ে থাকলেও সেটি মেরামত করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্ভোগসহ ওই স্থানে প্রতি বছর বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ভবনের সামনে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে আসা উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, চরভদ্রাসন থানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতক, চেয়ারম্যান ও স্কুল কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ভাঙা স্লাবের ওপর দায়সারাভাবে সংশ্লিষ্টরা কাঠের মাঁচা দিয়ে জাতীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করলেও বেশিরভাগ সময় স্লাবটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। যা ওই স্থানে আসা যাওয়া করা পথচারিসহ ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা প্রায়ই ভাঙা গর্তে পড়ে আঘাত পায়।
স্থানীয়রা অভিাযোগ করে বলেন, প্রতি বছর এ উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ এলেও সংশ্লিষ্ট কর্ত্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এই ছোট বাজেটের কাজটি গত এক বছরেও মেরামত করা হয়নি।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে নির্মিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই শুভ উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন)।
কমপ্লেক্স ভবনের সামনের ভাঙ্গা স্লাব ও পানির লাইন দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে পদাধিকার বলে এই কমপ্লেক্স ভবনটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ও তিন জন মুক্তিযোদ্ধা সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে এ ভবনটি নির্মাণ করে দিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের এখন বয়স হয়েছে ভবনের সামনে গুরত্বপূর্ণ এই স্লাব ও পানির লাইনে মেরামত না করায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।
বছর পাড় হলেও রিং স্লাবটি কেন মেরামত করা সম্ভব হয়নি জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. জাহিদ তালুকদার বলেন, এই স্লাবটি ও পানির লাইন মেরামত করায় কত টাকা ব্যয় হবে তার একটি হিসাব দেওয়ার কথা ছিল স্থানীয় সরকার বিভাগের। ব্যয়ের তালিকা না পাওয়ায় কোনো প্রকল্প নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে গুরত্বপূর্ণ এই স্লাবটি গত এক বছরে মেরামত না হওয়ার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাঁধন বলেন, সাবেক ইউএনও দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি মেরামত ব্যয়ের একটি হিসাব উপজেলা পরিষদে জমা দেওয়া হলেও এটি মেরামতে উপজেলা পরিষদ কোনো প্রকল্প দিতে পারেনি। নতুন ইউএনওর এ উপজেলায় যোগদানের পর এটি মেরামতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের সামনে গুরত্বপূর্ণ এই স্লাবটি ও পানির লাইন গত এক বছরে মেরামত না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কমপ্লেক্স ভবনের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই দায়ী করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কাউছার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
এসএম