বরগুনা: বরগুনায় উপকূলীয় অঞ্চলে বিরাজ করছে ঘূর্ণিঝড় মোখা আতঙ্ক। চলছে দ্রুত ধান কাটার কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কেবলই মরিচ, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী, মুগ ডাল ও ধান কাটতে ব্যস্ত দিনমজুর কৃষকরা। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে বোরো আবাদ ১০ হাজার ৮৬৪ হেক্টর। মুগ ডাল ইতোমধ্যে ঘরে উঠেছে ৫ হাজার ৪৯৬ টন, চিনাবাদাম ২২৫ টন, মরিচ ১ হাজার ১৮২ টন ও সূর্যমুখী ৮৬ টন। এছাড়া এখনও ২০ ভাগ ফসল মাঠেই আছে। একদিকে শ্রমিক সংকট অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক।
এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের ভীতির মূল কারণ দুর্বল বেড়িবাঁধ, মাঠের ফসল আর ঘেরের মাছ। তাছাড়া প্রবল জলোচ্ছাস ও প্রচণ্ড ঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে গৃহহীন হওয়ার আতঙ্ক তো আছেই।
ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করতে দিনমজুররা সারাদিন রোদে পুড়ে বিভিন্ন ফসল কেটে গৃহস্তের বাড়ির আঙিনায় তুলছেন। ধানের শীষ সোনালী রঙ ধারণ করেছে। অনেক ধান আবার পুষ্ট হলেও এখনও কাঁচা আছে।
১ নম্বর বদরখালী ইউনিয়নের কুমড়াখালী, সাত ঘর ও চালিত তলা গ্রামের কৃষক রশিদ ফরাজী, রহিম খান, আব্বাস ও পনুগাজী বলেছেন, ইতোমধ্যেই তারা মুগ ডাল, চিনা বাদাম, মরিচ ,মিষ্টি আলু ,সূর্যমুখী, বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু করেছেন। তবে অনেক ধান পরিপূর্ণভাবে পাকেনি। এসব কাঁচা ধানই বাজারে প্রতি মণ ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল হামিদ মুসল্লী বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসার আগে ২০ ভাগ ফসল দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটা শেষ করতে হবে। এর জন্য পাশের গ্রাম থেকে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ফসল ঘরে তোলার চেষ্টা করছি। অন্যদিকে ধান মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ জোবায়দুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মোখায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ফসলের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য ৮০ শতাংশ পাকা ধান, পরিপক্ষ আম ও অন্যান্য সংগ্রহ উপযোগী ফসল দ্রুত ঘরে তোলার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার সর্তকর্তামূলক তথ্য মাঠে ব্যাপক প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক কর্মস্থলে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি আবহাওয়া সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য ও পরামর্শের জন্য বাংলাদেশ কৃষি আবহাওয়া তথ্য সেবা (বামিস) পোর্টাল অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৯ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
এফআর