ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’কে জাতিসংঘের ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেছেন, এটা বাংলাদেশের সবার জন্য গর্বের।
বাংলাদেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্য নিয়ে জাতিসংঘে পাস হওয়া এক রেজুলেশনে ‘কমিউনিটি ক্লিনিকে’র বৈশ্বিক স্বীকৃতি উপলক্ষে বুধবার (১৭ মে) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মুখ্যসচিব।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, একটা আনন্দের সংবাদ দিতে চাই। সবাই আনন্দিত হবেন যে, প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উদ্ভাবনী মডেল বা উদ্ভাবনী উদ্যোগ কমিউনিটি ক্লিনিক সেটি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি রেজুলেশন হয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণার একটা চুড়ান্ত স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগের জাতিসংঘের স্বীকৃতি সেটা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সবাই গর্ব করতে পারি। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মহলে এক অনুকরণীয় রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেল এই রেজুলেশনের মাধ্যমে।
কমিউনিটি ক্লিনিককে ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’ মডেলের একটা অনন্য উদাহরণ হিসেবে মন্তব্য করে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক বাংলাদেশে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এখানে জমি জনগণ দিচ্ছে, ভবন নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার, সেবাদানে স্বাস্থ্যসেবাকর্মী সরকার দিচ্ছে। ওষুধ, যন্ত্রপাতিসহ সকল উপকরণ সরকার দিচ্ছে।
জাতিসংঘের রেজুলেশনে অন্য দেশগুলোকে বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণাকে বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উদ্যোগকে জাতিসংঘ স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা প্রদানের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলছে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্ভাবনী চিন্তাকে জাতিসংঘের অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোকেও অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে। বলা হয়েছে, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো যেন বাংলাদেশের এই কমিউনিটি ক্লিনিক ধারণাকে গ্রহণ করে এবং বাস্তবায়ন করে।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নতির পেছনে কমিউনিটি ক্লিনিকের অবদানের কথা উল্লেখ করে তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়া বা স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে নতুন নতুন সৃষ্টিশীলতার তৈরি হয়েছে সেগুলো সবই কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমেই শুরু।
তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের যে স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা , গর্ভবতী এবং প্রসূতির স্বাস্থ্য, নবজাতক এবং শিশুদের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা সেবা, পুষ্টি সেবা, ইপিআই কার্যক্রম পরিচালনা, সংক্রামক-অসংক্রামক যাবতীয় রোগের চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক একটা অসাধারণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পৌঁছাতে কমিউনিটি ক্লিনিক গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে মুখ্যসচিব বলেন, বাংলাদেশে আমরা যে বলি ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হবে, সে ক্ষেত্রে এই কমিউনিটি ক্লিনিক বড় মাইলফলক।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবর্তিত কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু হ্রাস পেয়েছে, শিশু মৃত্যু হ্রাস পেয়েছে, আমাদের নবজাতকের যে মৃত্যু সেটি হ্রাস পেয়েছে। সংক্রামক, রোধ প্রতিরোধ হয়েছে, অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ হয়েছে। অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা হচ্ছে।
জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’কে বৈশ্বিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ মে) জাতিসংঘে এ রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
রেজুল্যুশনটির শিরোনাম ছিল-‘কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২৩
এমইউএম/এমজেএফ