ঢাকা: নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের অধীনে বাস্তবায়নাধীন লাইটহাউজ বা বাতিঘর প্রকল্প নামে পরিচিত ‘এস্টাবিলিশমেন্ট অব গ্লোবাল মেরিটাইম ডিস্ট্রেস অ্যান্ড সেফটি সিস্টেম অ্যান্ড ইন্ট্রিগেটেড নেভিগেশন সিস্টেম (ইজিআইএমএনএস)’ প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
মঙ্গলবার (২৩ মে) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি হাজি মো. শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দায়ী প্রকল্প পরিচালক (পিডি), উপ-প্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি) ও দু’জন সহকারী প্রকল্প পরিচালককে (এপিডি) অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নতুন পিডি, ডিপিডি ও এপিডি নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে।
এছাড়া মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলজি আল সামিহ ও কয়েকটি সহ-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানসহ তদন্ত প্রতিবেদনে দায়ী অন্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানিয়েছে নাগরিক সংগঠনটি।
প্রথম শ্রেণির কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে শুরু থেকেই কালক্ষেপন ও বিভিন্ন পর্যায়ে সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়ে আসছে। বিষয়টি নজরে আসার পর একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে নৌ মন্ত্রণালয়। কমিটি সম্প্রতি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং সেখানে পিডি, ডিপিডি, এপিডি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালককে দায়ী করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ও নৌ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে কমডোর মো. নিজামুল হককে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদ থেকে প্রত্যাহার করেছে সরকার। কিন্তু একই প্রতিবেদনে দায়ী পিডি আবু সাঈদ মোহাম্মদ দেলোয়ার রহমান, ডিএনএস ফরহাদ জলিল বিপ্লব, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলজি সামিহ ও দু’জন এপিডির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি পিডি ও ডিপিডিকে স্বপদেই বহাল রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের উপকূলীয় এলাকায় নিরাপদ নৌ চলাচলের স্বার্থে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল ও দক্ষিণ কোরিয়ার ঋণসহায়তায় সরকার ২০১৪ সালে তিন বছর মেয়াদি ইজিআইএমএনএস প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় সাতটি রেডিও স্টেশন ও বাতিঘর স্থাপন এবং রাজধানী ঢাকার আগারগাঁয়ে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের একটি নিজস্ব ১১তলা ভবন নির্মাণ।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রকল্পের মেয়াদ তিন দফায় বাড়িয়ে বাস্তবায়নের শেষ সময় আগামী বছরের (২০২৪ সাল) জুন মাস নির্ধারণ করা হয়। একইসঙ্গে প্রকল্প ব্যয় ৩৮০ কোটি টাকা থেকে তিন দফায় বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭৭৯ কোটি টাকা। সর্বশেষ বর্ধিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার স্বার্থে পিডি ও ডিপিডিকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে জাতীয় কমিটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২৩
টিএ/এমজেএফ