ঢাকা: সমাজে লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী নানাভাবে বঞ্চনার শিকার। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কোথাও তাদের ন্যূনতম অধিকার বাস্তবায়ন হয় না।
বুধবার (২৪ মে) গাজীপুরের ছুটি রিসোর্টে বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি আয়োজিত এক কর্মশালার বক্তারা এসব কথা বলেন। একইসঙ্গে তারা সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
দিনব্যাপী মিডিয়া অ্যাডভোকেসি প্ল্যানিং শীর্ষক ওয়ার্কশপে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস ও আয়োজক সংস্থার প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর আরিফ হাসান।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বাংলাদেশ কোনো মনোলিথিক রাষ্ট্র নয়। এটি একটি বহুজাতি, বহুধর্ম, বহুলিঙ্গ ও বহুসংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ রাষ্ট্র। রাষ্ট্র পরিচালনায় ও সংবিধানের ভেতরে এই বহুত্ববাদী নীতির প্রতিফলন থাকতে হবে।
তিনি বলেন, এই বহুত্ববাদই গণতন্ত্রের আসল সৌন্দর্য। কাজেই রাষ্ট্রকে কেবল ধর্মনিরপেক্ষ হলেই চলবে না, একে জাতিনিরপেক্ষ, ভাষানিরপেক্ষ, লিঙ্গনিরপেক্ষ ও যৌননিরপেক্ষ হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকেরই অধিকার আছে নিজের জেন্ডার বা লিঙ্গ পরিচয় বেছে নেওয়ার। এই যৌনপ্রবণতা ও লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে সমাজ ও রাষ্ট্রে কারও বৈষম্যের শিকার হওয়ার সুযোগ নেই। লিঙ্গ, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে প্রত্যেক মানুষেরই মৌলিক মানবাধিকার রয়েছে এবং কোনো অবস্থাতেই সে অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। বঞ্চিত করা হলে তা হবে মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
আরিফ হাসান বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার ও হিজরাদের মূল্যায়ন করতে হবে। মনস্তাত্ত্বিকভাবে মানুষ নিজেকে যে লিঙ্গের অনুভব করে, সেই অধিকার দিতে হবে।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে কার্যক্রম সমন্বয়ক এ কে এম আনিসুজ্জামান বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় সবার দায়িত্ব রয়েছে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ সাধারণ মানুষ গণমাধ্যমের কথা বিশ্বাস করে। এতে জেন্ডার ডাইভার্সিটি সম্প্রদায়ের যারা আছেন ট্রান্স উইমেন, ট্রান্স ম্যান, হিজড়া তাদের অধিকার রক্ষা হবে।
কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্থার লিড অব কমিউনিকেশন রুহুল রবিন, লিয়াজো অফিসার তানিশা ইয়াসমিন চৈতি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২৩
আরএইচ