ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরে দুই দেশের পঞ্চাশ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস অব জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদার সঙ্গে জাপানের পার্লামেন্টে (ডায়েট) অবস্থিত স্পিকার্স কনফারেন্স কক্ষে শিরীন শারমিন চৌধুরীর সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংসদ সচিবালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সাক্ষাতের সময় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফর, জাপান-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশ বছর, বাংলাদেশে জাপানের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জাপান বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাপান-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত স্থাপন করেন। যা ইতোমধ্যে পঞ্চাশ বছর অতিবাহিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফর দুই দেশের পঞ্চাশ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দিয়েছে। জাপান বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। রাজধানী ঢাকায় মেট্রোরেল জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কের অনন্য মাইলফলক।
এসময় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও তথ্য-প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাপানকে অধিকতর বিনিয়োগের আহ্বান জানান স্পিকার।
হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস অব জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদা বলেন, জাপান বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও জোরদার হবে। এ ধরণের সংসদীয় সফর বিনিময় দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করবে।
সাক্ষাৎ শেষে শিরীন শারমিন চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধিদল জাপানের পার্লামেন্ট পরিদর্শন করেন। এ সময় হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভস অব জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদা স্পিকার শিরীন শারমিনকে জাপানের সংসদীয় কার্যক্রমের সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান।
এরপর বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকারের সাথে টোকিওর হোটেল ক্যাপিটলে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ লীগের প্রেসিডেন্ট আসো তারো সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় শিরীন শারমিন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকেই অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পানি ব্যবস্থাপনা, স্যানিটেশন, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ ও সংস্কার ইত্যাদি ক্ষেত্রে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। জাপান বর্তমানে বাংলাদেশের একক বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার। কোভিড মহামারির সময় ভ্যাক্সিন দেওয়ার মাধ্যমে জাপান বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন ইত্যাদি অর্জনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’র মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার তরুণ জনসমষ্টি অত্যন্ত দক্ষ। তাদের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে তথ্য-প্রযুক্তি খাতে জাপানের অধিকতর বিনিয়োগ কামনা করেন স্পিকার।
স্পিকার এরপর হাউজ অব কাউন্সিলরস অব জাপানের প্রেসিডেন্ট হিদেহিসা ওতসুজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় জাপান অধিক বিনিয়োগ করতে পারে। লিঙ্গ বৈষম্য, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্রে দুদেশ একসাথে কাজ করতে পারে।
প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর প্রশংসা করে প্রেসিডেন্ট হিদেহিসা ওতসুজি বলেন, বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফরের মাধ্যমে দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।
এরপর জাপানের স্পিকার হিরোইউকি হসোদার আমন্ত্রণে নৈশভোজে অংশ নেন বাংলাদেশের স্পিকার।
সাক্ষাতের সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন জাপানের সংসদ সদস্য- ইবায়াসি তাতসুনোরি, কাজিয়ামা হিরোসি, সুকাডা ইসিরো, মাকিসিমা কেরেন, ইয়ামামোতো হিরোনরি, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, সংসদ সদস্য আ ফ ম রুহুল হক, আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী, বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন, খাদিজাতুল আনোয়ার ও কানিজ ফাতেমা আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২৩
এসকে/এমজে