রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এনামুল হকের বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানিমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার (২৭ মে) দুপুরে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ‘নারী নির্যাতন ও সামাজিক অনাচার প্রতিরোধ কমিটি।
মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক রাশেদা খালেদ বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এমন ঘটনা ঘটাবেন, এটা অকল্পনীয়। তিনি তার সহকর্মীর সাথে যে অশ্লীল বাক্য এবং অঙ্গভঙ্গি করেছেন, তা ঠিক করেননি। এমন ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই আমরা ন্যায়বিচার চাই এবং তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর মাহমুদা কানিজ কেয়া বলেন, শারীরিক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন ও ভাষার ব্যবহার; এগুলো যে হয়রানিমূলক তা অনাকাংশে কেউ ধরতেই চায় না। তাই এই ব্যবহারগুলোর বিপরীতে যদি শাস্তি দিতে না পারি তাহলে এগুলো আরও ভয়ানকভাবে বাড়বে। তাই আমরা তার শাস্তি দাবি করছি।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির রাজশাহী বিভাগীয় সভাপতি দিল সেতারা, মহিলা পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি কল্পনা রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা বরজাহান আলী শাহজাহান, রাজশাহী থিয়েটারকর্মী কামরুল্লাহ সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবুল হাসান খন্দকার, সেক্টর কমান্ডার বিভাগীয় সভাপতি ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি শফিকুল রহমান বাদশাসহ অনেকে বক্তব্য রাখেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই সহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম অধ্যাপক এনামুল হক। তিনি গত রোববার (১৪ মে) এক শিক্ষকের যৌন হয়রানি করেন। পরে মঙ্গলবার বিভাগের আরেক শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে একই আচরণ করলে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়া উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে বিভাগীয় সভাপতির অফিস কক্ষে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে বিভাগীয় শিক্ষক অধ্যাপক এনামুল হক আরেক নারী শিক্ষকের সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ ও ভাষা ব্যবহার করেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আমরা পনের জন বিভাগীয় শিক্ষক ওই সময় কক্ষে উপস্থিত ছিলাম। সবার সামনে তিনি তার পরনের প্যান্ট খোলার ভঙ্গি করে বলেন, আমার সব সময় খোলা থাকে, এবার তোরটাও খুলে ছাড়ব। এরকম বলতে বলতে নিজের কাপড় খোলার চেষ্টা করেন। এ সময় অন্য সহকর্মীরা তাকে নিবৃত্ত করে। পরে মঙ্গলবার একাডেমিক কমিটির সভা শেষে সভাপতি বিভাগের সব শিক্ষককে বসতে বলেন। ড. এনামুল হককে যৌন হয়রানিকমূলক আচরণ করা থেকে বিরত থাকতে বললে তিনি আবারও অশোভন আচরণ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যকে সাত দিনের মধ্যে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ রাজশাহী জেলা ও রাবি শাখা এবং বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২৩
এসএস/এমজেএফ