ঢাকা, সোমবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে শতবর্ষী পুকুর ভরাট

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট     | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে শতবর্ষী পুকুর ভরাট

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে দুইটি প্রাচীন বটগাছ কেটে ফেলাসহ শতবর্ষী একটি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। তবে উচ্চ আদালতে এ ব্যাপারে রিট পিটিশন দাখিল করার পর পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং রাজিক আল-জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত ওই রিট পিটিশনের শুনানি শেষে এ আদেশ দেওয়া হয়।  

জানা গেছে, সদরপুর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আকোটের চর ইউনিয়নের কৃষ্ণমঙ্গলের ডাঙ্গীর বটতলার দুইটি বটগাছ কেটে শতবর্ষী পুকুরটি ভরাট করা হয়। প্রাচীন দুইটি বড় বড় শতবর্ষী বটগাছ কেটে প্রথমে ট্রাকে ভরে বালি ফেলে এবং পরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি তুলে পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে। পরে এ ব্যাপারে ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন’র পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং ব্যারিস্টার মো. কাউছার হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।  

গত ২৯ মে হাইকোর্টের যৌথ বেঞ্চে রিটের শুনানি শেষে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার আদেশ দেওয়া হয়।  

এর আগে গত ১৬ মে ওই পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করার জন্য ফরিদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ই-মেইলযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিল ‘ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন’।

এ ব্যাপারে সদরপুর ইউএনও আহসান মাহমুদ রাসেল এর আগে সাংবাদিকদের জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীন-ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় এনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এখানে তাদের জন্য সরকারি খাস জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণের কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, পুকুরটিতে আগে পানি থাকলেও বর্তমানে পুকুরটি অনেকাংশেই ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া খাস জমিও অপ্রতুল। ফলে ওই স্থানটিতেই আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির উপযুক্ত জায়গা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার, ভাড়া, ইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থ অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একই সঙ্গে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।