ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নতুন নতুন মাদকের চালান দেশে-বিদেশে আসছে। এটা বড় চ্যালেঞ্জ, একটি বন্ধ করলে আরেকটি চলে আসছে।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের বেগম সুফিয়া কামাল হলে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে ‘মানস’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যক্তি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি আমার সারা জীবনে সিগারেট বা অন্য কোনো মাদক গ্রহণ করিনি। আমার বন্ধুরা আমাকে সিগারেট খাওয়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল। বরাবরই আমি ডিনাই করেছি। কারণ, ছোটবেলায় বাবা আমাকে ওয়াদা করিয়েছিলেন আমি যেন কোনদিন সিগারেট না খাই। বাবার ওয়াদা রক্ষা করতে গিয়ে বন্ধুদের চাপ প্রত্যাখ্যান করতে সক্ষম হয়েছি। আসলে মাদকের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। পৃথিবীতে অনেক ক্ষুধার্ত মানুষ আছে। ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য খাদ্য ফলানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যেসব জমি মাদক চাষে ব্যবহৃত হয়, সেই জমি মাদক চাষে ব্যবহার না করে আমরা খাদ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করতে পারলে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের সাঁড়াশি অভিযানের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদকের বিরুদ্ধে সরকার সাঁড়াশি অভিযান প্ররিচালনা করায় মাদক সেবন করা অনেকটা কমে গেছে। নতুন-নতুন মাদকের চালান দেশে-বিদেশে আসছে। এটা বড় চ্যালেঞ্জ, একটি বন্ধ করলে আরেকটি চলে আসছে। মাদকের বিষয়ে ক্যাম্পেইন ও সচেতনতা তুলে ধরা দরকার।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন ও সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। ১৯৮৭ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ১৯৮৮ সালে তামাকমুক্ত দিবস সীমিত পরিসরে উদযাপন শুরু হয়। তবে ১৯৯০ সালের পর থেকে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর উদ্যোগে দিবসটি ব্যাপক পরিসরে উদযাপন এবং তামাকের বিরুদ্ধে সামাজিক এই আন্দোলনটি গতিশীল হয়ে আজকের অবস্থানে এসেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ ৮ হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে, যা দেশের খাদ্য উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে এবং এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে খাদ্য সঙ্কট তৈরি করতে পারে। তামাক চাষ মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে, যেটা সর্বজন স্বীকৃত। এমনকি কৃষকও সেটা জানে। তামাক চাষের কারণে খাদ্য শস্য চাষের জমি কমে যাচ্ছে। দেখা যায়, দেশের যে সকল জেলায় তামাক চাষ হয়, সেখানে পুষ্টিকর খাদ্য সংকট রয়েছে। পরিবেশ, প্রাণীকূলেও তামাক চাষের বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে। তামাক পোড়ানোর ফলে বাংলাদেশে ৩০% বন উজাড় হচ্ছে। পার্বত্য এলাকায় তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বনভূমি উজার হচ্ছে। শুধু তামাক প্রক্রিয়াজাত করতে প্রতি বছর ২৯ লাখ ৩২ হাজার গাছ পোড়ানো হয়। এক একর জমিতে যে পরিমাণ তামাক উৎপন্ন হয়, এটি শুকানোর জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫ টন কাঠ। উপরন্তু তামাক চাষে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক জীব-বৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
এমএমআই/এমজেএফ