সাভার (ঢাকা): ঢাকার ধামরাইয়ে সোয়া ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুবছর আগে সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও নির্মিত হয়নি দুই পাশের সংযোগ সড়ক। ফলে স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত ২৫ ফুট উঁচু মই বেয়ে সেতুতে উঠে হতে হয় পারাপার।
ধামরাই উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্র জানা গেছে, ৪৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি ৪ কোটি ২১ লাখ ৫৪ হাজার ২৭১ টাকা নির্মাণ ব্যয়ে কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জয়েন্ট ব্রিকস ট্রেডার্স। উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁও-কেষ্টি এলাকার গাজিখালি নদীর ওপর সেতু নির্মাণ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। সে সময় উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁও, বাথুলি, বালিথা, ভাটারখোলা, বারপাইকা ও কেষ্টি এলাকাসহ ১০ থেকে ১২টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের জন্য তৈরি করা হয় সেতুটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২০২১ সালের জুনে সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলেও নির্মিত হয়নি এর দুপাশের সংযোগ সড়ক। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা। সেতু পার হওয়ার জন্য নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের মই তৈরি করে সেই মই দিয়ে বেয়ে সেতুতে ওঠানামা শুরু করেন তারা। কৃষিপণ্যসহ নানা ধরনের মালপত্র কাঁধে করে মইয়ে উঠে পারাপার হতে হয়। পাশেই নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মই বেয়ে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু হয়ে যাতায়াত করেন।
হজরত মিয়া নামের এক বাসিন্দা বাংলানিউজকে বলেন, একটা সময় এখানে খাল ছিল, সেটাই ভালো ছিল। তখন তো নৌকা দিয়ে পারাপার করতে পারতাম। কিন্তু এখন সেতু দিয়েছে কিন্তু এটার কোনো কাজই নেই। নির্মাণের পর দুই বছের অতিক্রম হলেও সেতুটি উপকারে আসেনি আমাদের। একটি সড়কের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করেছে দেখলাম তাই দ্রুত আরেকটি সংযোগ সড়ক নির্মাণের অনুরোধ করছি।
বেলায়েত নামের এক কলেজ ছাত্র বাংলানিউজকে বলেন, সেতুর ওই পাশে আমাদের গ্রামসহ দশটির মতো গ্রাম আছে। এখানে কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার ব্যবস্থা নেই। কোনো মালামাল নিতে পারি না। আমাদের এই দুর্ভোগ নিয়ে অনেকবার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পর একটা সেতু করে দেওয়া হয় দুই বছর আগে। কিন্তু সেই সেতু দিয়ে তো আমরা একটু সুবিধা পাবো দূরে থাক আরও দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। এমন সেতু তৈরি হয়েছে দুই পাশে রাস্তা নেই। এখন মই দিয়ে উঠতে হয়।
সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান রমিজুর রহমান চৌধুরী রোমা বাংলানিউজকে বলেন, পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইতোমধ্যে উপজেলার আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে সেতুটির বিষয়ে আলোচনা হওয়ায় সংযোগ সড়কের কাজ ধীরগতিতে হলেও শুরু হয়েছে। এই সেতুর সড়কগুলো হলে আমাদের স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ থাকবে না।
ধামরাই উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামাণিক বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিভিন্ন মাধ্যমে সেই ব্রিজটির সর্ম্পকে জানতে পারি। পরবর্তীতে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। এর ফলে সেতুটির একপ্রান্তের সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে এবং অপর প্রান্তের সংযোগ সড়কের কাজের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই জনগণের কষ্ট লাঘব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৩
এসএফ/এসআইএস