ফরিদপুর: একদিকে টানা কয়েকদিন ধরে তীব্র গরম অন্যদিকে দিনেরাতে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে ফরিদপুরের জনজীবন। ঘরে-বাইরে সবখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৃষ্টির জন্য মানুষ আকাশপানে তাকিয়ে থাকার পাশাপাশি এখন মাথার উপর সিলিং ফ্যানের দিকেও তাকাচ্ছেন।
শনিবার (০৩ জুন) সকালে ২৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ফরিদপুর আবহাওয়া অফিস। তবে দুপুর গড়ালে এ তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৮ ডিগ্রিতে উঠে।
জেলায় চলছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। এতে হাঁসফাঁস অবস্থা সবার। তবুও জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। অন্যদিকে ফসলি জমিতে পানিসংকট ঠেকাতে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে কৃষকদের। একটু স্বস্তির আশায় পানিতে শরীর ভিজিয়ে নিচ্ছেন মাঠে কাজ করা মানুষেরা।
অন্যদিকে রাত-দিন মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ বার করে বিদ্যুৎ যাচ্ছে। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ গেলে মানুষজন রাস্তা কিংবা বাড়ির পাশের খোলা জায়গা বা গাছের নিচে আশ্রয় নিলেও রাতে পড়তে হচ্ছে বিপাকে। এছাড়া রাত ১২টা কিংবা রাত ১ টায়ও কয়েকদিন যাবৎ বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এ সময় লোডশেডিংয়ে ঘুমের বিঘ্ন ঘটছে এ জেলার মানুষের।
এব্যাপারে ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, ফরিদপুরে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে। এ তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন প্রবাহিত হতে পারে।
এ আবহাওয়া কর্মকর্তা জানান, গতকাল শুক্রবার (০২ জুন) সকালে ফরিদপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস; তবে একইদিন সন্ধ্যায় তা রেকর্ড করা হয় ৩৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে শনিবার (০৩ জুন) সকালে রেকর্ড করা হয় ২৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সন্ধ্যায় যখন ফের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হবে তখন তাপমাত্রা আরও বাড়বে বলে জানান এ আবহাওয়া কর্মকর্তা।
লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে জানতে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. আবুল হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
তবে সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (গ্রাহক সেবা) এস.এম রুবাইদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু না হওয়ায় এ লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেড়েছে। তবে আগামী ২৫ জুন পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হওয়ার কথা রয়েছে। কেন্দ্রটি চালু হলে তখন এ লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেকটা কমে আসবে।
রাত ১২ টার পরে বিদ্যুৎ নেওয়ার ব্যাপারে তিনি জানান, পাওয়ার গ্রিড থেকে যখন যতটুকু আমাদের ঘাটতির কথা বলা হয়; তখন ততটুকু বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়। সেটা রাত ১২ টা-১ টা কিংবা দিনেরাতের নির্দিষ্ট কোনো সময় বলে কথা নয়। ঘাটতি বলা হলেই বিদ্যুৎ নিতে হচ্ছে।
এদিকে গত সোমবার এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে জ্বালানি ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২৩
এসএএইচ