ঢাকা: যারা বিভিন্ন সময় আগুন সন্ত্রাস করেছে তাদের এবং তাদের হুকুমদাতা ও অর্থদাতাদের তালিকা করা হচ্ছে। এসব তালিকা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রোববার (৪ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সরকারের লাফালাফি কমে গেছে- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম বক্তব্য রাখার সময় মাঝে-মধ্যে কয়েক সেন্টিমিটার লাফ দেন। এটি হয়তো তার অভ্যাস, হতেই পারে। বিভিন্নজন বক্তৃতা করার সময় লাফ দেন, এটি হয়তো তার অভ্যাস, দোষের কিছু নয়।
তিনি বলেন, আজরাইল নাকি সরকারের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে, বেশি কথা বলে লাভ নেই। আজরাইল তাদের পেছনেও আছে। তাদের সঙ্গে শয়তানও আছে। এজন্য আজরাইল তাদের তাড়াতাড়ি ধরবে। পার্থক্যটা হচ্ছে সেখানে। কারণ তিনি যে বিষয়কে ইঙ্গিত করে বলেছেন, তা যদি আজরাইল হয়, তাহলে সেই আজরাইল তাদের অনেক বেশি কাছাকাছি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যার সঙ্গে শয়তান থাকে, আজরাইল কিন্তু তার কাছে আগে পৌঁছায়। এ ধরনের বক্তব্য রেখে আত্মতুষ্টি পাওয়ার কোনো লাভ হবে না। আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিন। আপনাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মাঠে মারা গেছে এবং সারা দুনিয়ার কোনো জায়গা থেকে সমর্থন পায়নি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান, যারা বিভিন্ন সময় আগুন সন্ত্রাস করেছে তাদের এবং তাদের হুকুমদাতা ও অর্থদাতাদের তালিকা করা হচ্ছে। এসব তালিকা বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হবে।
২০ ঘণ্টা জার্নি করে আমেরিকা যাব না, অন্য দেশ ও মহাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াব- প্রধানমন্ত্রী কি চাচ্ছেন বা সরকার কি চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাক- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই নয়। আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করতে চাই। সেই কারণে আপনারা দেখেছেন সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পররাষ্ট্রসহ অন্যান্য বিষয়ে অনেক ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চাই। একইসঙ্গে আমরা অন্যান্য দেশ, যেমন দক্ষিণ আমেরিকা এখনো উন্মুক্ত নয়, সেখানে আমরা বাণিজ্য খুব একটা বাড়াতে পারিনি, সেখানে আমরা বাড়াতে চাই।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শুধুমাত্র শ্রমিক রপ্তানি করা হয়, মধ্যপ্রাচ্যে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, ফ্যাশন সচেতনতা বেড়েছে, সেখানেও আমাদের বাণিজ্য বাড়ানো প্রয়োজন। আশিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে আমাদের বাণিজ্য সম্ভাবনা প্রচুর, সেখানেও আমরা বাণিজ্য বাড়াতে চাই। ওশেনিয়া অঞ্চলে আমাদের বাণিজ্য সম্ভাবনা প্রচুর, সেখানেও আমরা বাড়াতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সে কথাই বলেছেন। আর যারা মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণা করার পর যারা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিয়ে টেনশনে আছেন, তাদের টেনশন কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ওই কথা বলেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে যারা পেশাদার সমালোচক, কিছু প্রতিষ্ঠান আছে পেশাদার সমালোচক, রাজনৈতিক সমালোচক, সবাই একটি কথা বলেছেন- এটি একটি ঘাটতি বাজেট। পেশাদার সমালোচকরা একটু খোঁজখবর নিয়ে বললে ভালো হতো। পেশাদার সমালোচকরা সমালোচনা করার আগে গবেষণা করেন, এটা তাদের বক্তব্য। তবে কতটুকু গবেষণা হয়, তা আমি জানি না।
যারা বলেন ঘাটতি বাজেট- তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আমাদের ডিজিপির অনুপাতে ৫ দশমিক ২ শতাংশ ঘাটতি। ভারতে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। পৃথিবীর ১০০ থেকে ১২০ দেশ বাজেট দেয়। ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের তুলনায় আমাদের ঘাটতি কিন্তু কম।
যারা রাজনৈতিক সমালোচক, তারা তো বাজেট না পড়েই বক্তব্য দিয়ে দিয়েছেন- উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আরেকটি বিষয় হলো এই বাজেটকে জনববান্ধব ও গরিববান্ধব এজন্যই বলেছি, সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি উপকারভোগীর সংখ্যা ও বিভিন্ন ভাতাধারীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর কথা হয়েছে। সরাসরি দুই কোটি মানুষ সরকারের কাছ থেকে নানাভাবে অর্থসহ নানা সহায়তা পাবে। তাহলে কি এটি গরিববান্ধব বাজেট নয়?
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ