জামালপুর থেকে: হামলা-মামলা করেও সত্য প্রকাশ থামানো যায়নি বলেই খুন হয়েছেন বাংলানিউজের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম। এমনটি মনে করেন স্থানীয় জনগণ, সাংবাদিক ও পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেলে বকশীগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, নাদিম সৎ ও সাহসী ছিলেন। তার ওপর হামলা করে মামলা দিয়ে জেলে নিয়েও সত্য সংবাদ প্রকাশ থেকে আটকাতে পারেনি খুনিরা।
স্থানীয় বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আনিসুজ্জামান গামা বলেন, আমরা তার জীবননাশ ঠেকাতে পারলাম না। দলমত নির্বিশেষে চাই বকশীগঞ্জের মাটিতে হত্যাকারীদের বিচার হোক। সব ভেদাভেদ ভুলে আমরা বিচার চাই। সাংবাদিকেরা সত্য প্রকাশ করতে গেলেই প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হতে থাকলে কথা বলার কেউ থাকবে না।
বকশীগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জুম্মন তালুকদার বলেন, বাবু চেয়ারম্যান বকশীগঞ্জে এসে সাধুরপাড়া থেকে এসে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে যাবে, তা সহজ নয়। যারা শেল্টার দিয়েছে তাদের বিচার হতে হবে। সাংবাদিক ভাইদের সঙ্গে আমরাও কথা দিলাম নাদিম হত্যার বিচার হওয়ার আগে পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না।
এ সময় তিনি আরও বলেন, গত পরশুই শুধু নয় এর আগেও হামলা করা হয়েছিলো। সেদিন - মেয়র সাহেবের লোকজন আর আমরা ছিলাম বলে নাদিমকে হত্যা করতে পারেনি খুনিরা। কাল কেউ না থাকায় সুযোগ পেয়ে হত্যা করেছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহীনা বেগমের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। বিচার করতেই হবে।
উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুমা ইয়াসমিন স্মৃতি বলেন, বকশীগঞ্জের জনগণকে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমাদের নাদিম হত্যার বিচার চাই। তিনি সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন।
পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে নিহত সাংবাদিকের কন্যা জান্নাত বলেন, আমার বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। তিনি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি।
তিনি বলেন, রাজাকারের মেয়ে শাহীনা বেগমকে নিয়ে একাত্তর টিভিতে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। মধ্যবাজারে আমার বাবার ওপরে হামলা করা হয়। সেই হামলার পরও বিচার পাইনি, নিরাপত্তা পাইনি। আগের ঘটনায় যথাযথভাবে বিচার হলে হলে এভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হতো না। স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ যেন অপরাধ।
জান্নাত আরও বলেন, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে বাবুর অপকর্ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। সেখান থেকে আমার বাবার ওপরে তারা ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে পরিকল্পনা করে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলা করে। মামলা খারিজ হলেও সেখানেই ঘটনা শেষ হয়নি। বাবু চেয়ারম্যান ও তার ছেলে ফাহিম ফয়সাল আমার বাবার ওপর হামলা করে। অচেতন অবস্থায় রেখে তারা পালিয়ে যায়। হাসপাতালে মারা যায় আমার বাবা।
বাবু, তার ছেলে ফয়সাল, সহযোগী মুনির, সাঈদ ও রেজাউলসহ মাস্টারমাইন্ড শাহীনা বেগমকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, সাংবাদিকের আত্মত্যাগ বৃথা যায় না।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন কিয়ামতুল্লা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাজন মিয়া, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীমসহ আরও অনেকে
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৭ ঘণ্টা, ১৬ জুন, ২০২৩
এনবি/আরএইচ