জামালপুর: বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর করেসপন্ডেন্ট গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নির্মমভাবে হত্যার এক মাস হয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে এই হত্যার ঘটনায় ১৭ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন৷
এদের মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি রয়েছেন ৫ জন।
কিন্তু এক মাস হয়ে গেলেও বাবুর ছেলে ফাহিমসহ এজাহারভুক্ত আরও ১৭ আসামি এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন৷
এজাহারভুক্ত ৫ আসামি গ্রেপ্তারের পর আর নাদিম হত্যা মামলার তেমন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
সাংবাদিক নাদিম হত্যার পর এ ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
নাদিম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচারের দাবিতে জামালপুরের গণমাধ্যমকর্মীসহ সারাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
এই ইস্যুতে কথা বলেছেন মন্ত্রীরাও। এবং বিচার চেয়েছে মার্কিন দূতাবাস।
সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে গত ১৪ জুন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন গোলাম রব্বানী নাদিম।
বকশিগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় তার ওপর হামলা করে ইট দিয়ে আঘাত করা হয়। পরদিন (১৫ জুন) দুপুরে ময়মনসিংহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের পরিচয়
গোলাম রাব্বানী নাদিম ছিলেন একজন জনপ্রিয় সাংবাদিক। তিনি দীর্ঘদিন বাংলানিউজের জামালপুর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। এবং জেলা অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনেও কাজ করেছেন। তিনি সাপ্তাহিক বকশিগঞ্জ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন।
নাদিম বকশিগঞ্জ উপজেলার নিলাখিয়া ইউনিয়নের গোমের চর গ্রামের আবদুল করিম ও আলেয়া বেগমের দম্পতির একমাত্র ছেলে ছিলেন। নাদিমের দুই বোন রয়েছেন। নাদিমের তিন সন্তান রয়েছে। দুই ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাত ও রিশাদ আব্দুল্লাহ এবং এক মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত। তার স্ত্রী মনিরা বেগম।
দুর্নীতি, অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন নাদিম।
আতঙ্কে রয়েছে নাদিমের পরিবার
এই হত্যাকাণ্ডের পর ১৭ জুন সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বকশীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে আসামি হিসেবে মাহমুদুল আলম বাবু, তার ছেলে ফাহিম ফয়সাল রিফাতসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বলেন, পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। পুলিশ এজাহারভুক্ত আর কোনো আসামি ধরছে না। এদিকে মামলার প্রধান আসামি জামিনের জন্য বারবার আবেদন করছে। তিনি যদি জামিনে মুক্ত হন, তাহলে আর আমাদের আর রক্ষা নেই। আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। র্যাব পঞ্চগড় থেকে যে কজন আসামিদের ধরে নিয়ে আসছে, এরপর আর কোনো এজাহারভুক্ত আসামি ধরা হয়নি। ধরতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ বলছে, তারা নাকি চেষ্টা করছে। কীভাবে তারা চেষ্টা করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। মামলা হওয়ার পর এক মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন করে এজাহারভুক্ত একজন আসামিকেও ধরতে পারছে না পুলিশ।
নাদিমের মেয়ে রাব্বিলাতুল জান্নাত বাংলানিউজকে বলেন, আজ আব্বু আমাদের মাঝে নেই একমাস। এর মধ্যে কত কিছু পরিবর্তন দেখেছি। বাবার হত্যাকারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। আবার হত্যাকারীদের পরিবারের লোকজন আমাদের হুমকিও দিচ্ছে। রাস্তা-ঘাটে দেখা হলেই তারা হুমকি দিয়ে কথা বলে। বাবু জামিনে বের হলে নাকি আমাদের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলবে। এই অবস্থায় পুলিশের ভূমিকাও অনেক রহস্যের। আমার বাবা হত্যার হওয়ার আগে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। আমরাও জীবনের নিরাপত্তা চাই এখন।
এজাহারভুক্ত ২২ আসামির মধ্যে মাত্র ৫ জন গ্রেপ্তার
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ মামলায় র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে ১৭ জন আসামি গ্রেপ্তার করেছে। তবে এদের ভেতর ৫ জন আসামি এজাহারভুক্ত৷ আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু চেয়ারম্যান, রেজাউল করিম ও মো. মনিরুজ্জামান। ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তারা। ইতোমধ্যে দুইবার প্রধান আসামির পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হয়েছে।
গত এক মাস একই কথা পুলিশের
পুলিশ জানিয়েছে, তারা নাদিমের হত্যার ঘটনাটি খুব গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। তারা নাদিমের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। তারা আশা করছেন, খুব দ্রুতই নাদিমের বাকি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পারবে।
গত ১৯ জুন মামলাটি জামালপুর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জামালপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, আসামি গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ডিবি পুলিশের কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করছে। এ মামলার সব আসামিকে ধরা হবে।
বকশিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল রানা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৭ জনকে গ্রেপ্তারে করতে সক্ষম হয়েছি। অভিযান চলমান রয়েছে। জেলা গোয়েন্দা শাখা টিমের পাশাপাশি পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আমাদের টিম কাজ করছে ৷ নাদিম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কেনো হত্যা করা হয় ও কারা জড়িত?
বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি দেওয়া হয় চলতি বছরের প্রথম দিকে। সেই কমিটিতে ‘সভাপতি সাহিনা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার রাজাকারের সন্তান’ - এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন নাদিম। সে সময় নাদিমের ওপর সাহিনা বেগম ও বাবুল তালুকদারের নেতৃত্ব একটি হামলা হয়। সে যাত্রায় নাদিম বেঁচে যায়।
তবে কিছুদিন পর সাহিনা বেগম ও বাবুল তালুকদারে অনুসারী সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান ও সাধুরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল আলম বাবুর ‘নারী কেলেঙ্কারির’ নিউজ প্রকাশ করেন নাদিম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান উপস্থিত থেকে সাহিনা ও বাবুল তালুকদারের লোকজন নিয়ে নাদিমের ওপর ১৪ জুন রাতে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাংবাদিক নাদিম।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাহিনার অনুসারী ও বাবুল তালুকদারের অনুসারী তাঁতি লীগের নেতারা হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন। তবে এই দুই নেতার বিরুদ্ধে জেলার পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা তদন্তও করার প্রয়োজন মনে করেননি জেলার নেতারা।
যেভাবে হত্যা করা হয় নাদিমকে
১৪ জুন বুধবার রাত ১০টার দিকে বকশিগঞ্জের পাট হাটিয়ায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে ঘটে যাওয়া ওই নৃশংস হামলার বর্ণনা দেন সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের সহকর্মী আল মুজাহিদ বাবু। যিনি ঘটনার সময় নাদিমের সঙ্গে ছিলেন। তিনি হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী।
তিনি বলেন, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুর অপকর্ম নিয়ে নাদিমসহ আমরা কয়েকজন নিউজ করেছিলাম। তারপর থেকেই তিনি ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন আমাদের ওপর। পরে আমাদের নামে ডিজিটাল আইনে মামলাও করেন তিনি। সেই মামলা ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেন। এ নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়েছিল। এর দুই তিন ঘণ্টা পর রাতে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে নাদিমের ওপর হামলা হয়।
তিনি আরও বলেন, নাদিমকে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। তারপর তাকে মারতে মারতে পাশের একটি অন্ধকার গলিতে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুর লোকজন। এছাড়া চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাত ইট দিয়ে নাদিমের মাথায় আঘাত করে। ঘটনার সময় ওই গলিতে অন্ধকারে আড়ালে দাঁড়িয়েছিলেন চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবু। সেসময় আরও কয়েকজন ছিলেন। মারধরের সময় আমি আটকাতে গেলে আমাকেও তারা মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী চলে যায়। পরে নাদিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন>>
>>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যান বাবুকে আনা হচ্ছে ঢাকায়
>> অবশ্যই হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করা হয়েছে: এসপি নাসির
>> নাদিম হত্যা: বাবু চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাত ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: চেয়ারম্যান বাবুসহ গ্রেপ্তার ৩
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: আদালতে ৯ আসামি
>>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: চেয়ারম্যান বাবুসহ গ্রেপ্তার ৩
>> চেয়ারম্যান বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নামে মামলা
>> নাদিম হত্যা, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: কাদের
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: খুনিদের বিচারের দাবিতে চাঁদপুরে মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রতিবাদে গাজীপুরে মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জাবি শিক্ষকদের
>> নাদিম হত্যা: বিচার না হলে জনতাকে নিয়ে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: নিন্দা জানিয়েছে আসক
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা, নেই মত প্রকাশের স্বাধীনতা: নজরুল ইসলাম
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি সিইউজে’র
>> একজন ইউপি চেয়ারম্যানের এতো ক্ষমতা! বিস্মিত নোয়াখালীর সাংবাদিকরা
>> নাদিম হত্যা: খুনিদের বিচারের দাবিতে বকশীগঞ্জে মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রতিবাদে শেরপুরে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: বিচারের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন
>> নাদিম হত্যার প্রতিবাদে বগুড়ায় মানববন্ধন-বিক্ষোভ
>> সাংবাদিক নাদিমের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে ভাঙ্গায় মানববন্ধন-বিক্ষোভ
>> নাদিম হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি সিরাজগঞ্জের সাংবাদিকদের
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার বিচারের দাবিতে পাবনায় মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা: দ্রুত বিচার আইনে খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি
>> জামালপুরে বাবুকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে বরখাস্ত ও ফাঁসির দাবি
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: বিচার দাবিতে ঢাকায় বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রতিবাদে জয়পুরহাটে মানববন্ধন
>> নাদিম হত্যা: বরিশালে সাংবাদিকদের মানববন্ধন, ওসি-এসপির প্রত্যাহার দাবি
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় সান্তাহার প্রেসক্লাবের প্রতিবাদ
>> সাংবাদিক নাদিমের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন আজ
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যার প্রতিবাদে শেরপুর প্রেসক্লাবের সমাবেশ
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: সত্য সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ
>> নাদিম হত্যা: বাবুকে গ্রেপ্তার দাবি ময়মনসিংহ রিপোর্টার্স ইউনিটির
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: খুনিদের বিচার দাবিতে ভূঞাপুরে মানববন্ধন
>> সাংবাদিক নাদিম হত্যা: জড়িতদের শাস্তির দাবি জাবি শিক্ষকদের
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২৩
এসএফ/এসএএইচ