নড়াইল: স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ভোরের দিকে তাকে নড়াইল সদর থানার মালিবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে সদর ও লোহাগড়া থানার পুলিশ।
বিকেলে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম জাহাঙ্গীর ওরফে হেদায়েত শেখ (৫৫)। তিনি লোহাগড়া উপজেলার পদ্মবিলা গ্রামের মৃত গোলাম রব্বানী শেখের ছেলে।
হত্যা মামলা ছাড়াও তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইনের অন্য একটি মামলায় চার বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়া লোহাগড়া ও নড়াইল সদর থানায় একাধিক চুরি মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও আঞ্জুয়ারা বেগম নামে এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জাহাঙ্গীর। এরপর থেকেই মূলত পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। ২০১২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে জাহাঙ্গীরের ছেলে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী মমতাজ বেগম খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রবিউল ইসলাম তার মাকে দেখতে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে। এ সময় তিনি তার বাবার লুঙ্গিতে রক্ত দেখে কারণ জানতে চাইলে গরু জবাই করেছেন বলে জানায় তার বাবা। পরে রবিউল ও তার স্বজনেরা খোঁজাখুঁজি করে ওই গ্রামের বিলে মমতাজের গলা কাটা মরদেহ দেখতে পান। এ ঘটনায় ছেলে রবিউল বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় বাবা জাহাঙ্গীর শেখ, খলিল শেখ ও সৎ মা আঞ্জুয়ারা বেগমকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. কেরামত আলী এ মামলায় জাহাঙ্গীর ওরফে হেদায়েত শেখকে (৫৫) মৃত্যুদণ্ড ও একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। বাকি দুই আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের খালাস দেওয়া হয়েছে।
লোহাগড়া থানার ওসি নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, রায়ের আগে থেকেই জাহাঙ্গীর পলাতক ছিলেন। সাজা থেকে বাঁচতে খুলনার ডুমুরিয়ায় তৃতীয় বিয়ে করে নতুন সংসার বেঁধে আত্মগোপন করেছিলেন। তিনি শ্বশুর বাড়িতে থেকে ফলের ব্যবসা করতেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে সদর থানার মালিবাগ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
এসআরএস