ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী পৌরসভায় অবস্থিত স্টেশন রোডে স্বর্ণা সার্জিক্যাল ক্লিনিক, হাসপাতাল রোডে আল আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও দি ইস্টার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামের তিনটি ক্লিনিকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে বন্ধের নোটিশ করেছেন ফরিদপুর সিভিল সার্জন মো. সিদ্দীকুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) ক্লিনিক তিনটি লিখিতভাবে বন্ধের নোটিশ দেন।
এদিকে, ওই তিন ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক, সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
এদিন দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী হাসপাতাল রোডে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বোয়ালমারীতে এই তিনটি ক্লিনিক পরিদর্শনে আসেন। তিনটি ক্লিনিকে প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকাসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম পাওয়ায় তিনটি ক্লিনিককেই মৌখিক বন্ধের ঘোষণা দেন।
এ ঘটনায় এদিন সন্ধ্যায় দি ইস্টার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সাখাওয়াত হোসেন, ঝিল্লু, জাকির হোসেন তাদের কর্মচারীদের নিয়ে হাসপাতাল রোডে মিছিল বের করে। মিছিলে ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) মো. ফরিদ হোসেন মিয়া, ফরিদপুর সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান, বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এমএম নাহিদ আল রাকিবের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন, কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বক্তব্য দেন তারা।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, চলমান অনিয়ম ও ক্রটি বিচ্যুতি সংশোধনের নিমিত্ত স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হইল।
দি ইস্টার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের (ঢাকা) পরিচালক ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া বোয়ালমারীতে দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে জড়িত আছে। আমাদের ক্লিনিক বন্ধ হলে তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভালো চলবে, তাই ফরিদ হোসেন মিয়া সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের (টিএইচএ) দিয়ে আমাদের ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছেন। এছাড়া ক্লিনিকে পরিদর্শনের সময় ক্লিনিকের মালিকদের ওপরও চড়া হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ্ পিকুল বলেন, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে কয়েকটি ক্লিনিক পরিদর্শনে আসেন সিভিল সার্জন। তার মধ্যে তিনটি ক্লিনিকে অনিয়ম ও ক্রটি দেখে মৌখিকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত। কিন্তু কয়েকজন ক্লিনিক মালিকরা ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া, ফরিদপুর সিভিল সার্জন ও বোয়ালমারী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মিছিল করে যে অশ্লীল ভাষায় বক্তব্য রেখেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ড. এমএম নাহিদ আল রাকিব বলেন, ক্লিনিক পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়- অপরিষ্কার, ডাক্তার নেই, সিজারিয়ান কক্ষে ধুলাসহ নানা অনিয়ম ও ক্রটি বিচ্যুতি। তাই সিভিল সার্জন স্যার ক্লিনিক বন্ধের তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দি ইস্টার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক কর্মচারীদের নিয়ে ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), ফরিদপুর সিভিল সার্জন এবং আমার বিরুদ্ধে মিছিল বের করে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেন। এর প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধন করি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
এসএম/এসআরএস