ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কিশোরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে কারারক্ষীর মৃত্যুদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
কিশোরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে কারারক্ষীর মৃত্যুদণ্ড

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে খাইরুল ইসলাম (২৮) নামে এক কারারক্ষীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরের দিকে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন।

এ সময় আসামি খাইরুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃতদণ্ডপ্রাপ্ত খাইরুল টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অন্যদিকে, খাইরুলের স্ত্রী নিহত রুমা আক্তার (২২) কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার মানিকখালী গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৯ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের তৎকালীন কারারক্ষী খাইরুল ইসলামের সঙ্গে রুমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে খাইরুল তার স্ত্রীকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগারের ফ্যামিলি কোয়ার্টারে বসবাস করতেন। বিয়ের ছয় মাস পর যৌতুক হিসেবে খাইরুলকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ৩ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এরপরও মোটরসাইকেল কেনার কথা বলে ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন খাইরুল। সেই টাকা এনে দিতে স্ত্রী রুমা অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে প্রায়ই রুমার ওপর নির্যাতন করতেন খাইরুল। ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে খাইরুল যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে জখম করেন। এরপর খাইরুল রাত আড়াইটার দিকে শ্বশুরবাড়িতে খবর দেন যে, রুমা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কারাগারের কোয়ার্টার থেকে রুমাকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে তাকে (রুমা) উন্নত চিকিৎসার জন্য বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে (রুমা) ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে ২৯ ডিসেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে রুমার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।  

এ ঘটনায় ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর নিহত রুমার মা ছিনু বেগম বাদী কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় খাইরুলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।  

মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ জুলাই কিশোরগঞ্জ মডেল থানার তৎকালীন পরিদর্শক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন আদালতে আসামি খাইরুলের নামে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। মামলার শুনানি শেষে ২০ জুলাই, ২০২৩ বিচারক মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এ রায় দেন।  

কিশোরগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) অ্যাডভোকেট এম এ আফজল বাংলানিউজকে মামলার এ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।