ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে কলকাতাফেরত ৫ যাত্রীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ট্যাপেন্টাডল উদ্ধার করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচ যাত্রী হলেন - সোলাইমান (৪৪), হৃদয় ইসলাম রাজু (২৯), এ, কে, এম আবু সাইদ (৪৭), আশিক সাইফ (৩৬) ও ফারুক (৩৫)।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, এ মাদক পাচারের নেপথ্যে রয়েছে একটি চক্র। চক্রটি কলকাতা থেকে এসব মাদক ঢাকায় নিয়ে আসতেন। এরপর তারা সেগুলো সারা দেশে ছড়িয়ে দিতেন।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা কলকাতা থেকে লাগেজে করে এসব মাদক নিয়ে ফিরছিলেন। কিন্তু বিমানবন্দরের
গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪২ হাজার ২০০ শত পিস ট্যাপেন্টাডল মাদক উদ্ধার করা হয়। এ যাবৎকালের ট্যাপেন্টাডলের সর্ববৃহৎ চালান এটি।
চক্রটির এ মাদক পাচারের কৌশল বিষয়ে তিনি জানান, পুলিশের কাছে তথ্য ছিল একটি চক্র ভারত থেকে ফেন্সিডিল ও ট্যাপেন্টাডলের বড় চালান এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তারা অনুসন্ধান করতে থাকেন। চক্রটির মূলহোতা মো. সোলাইমান। তিনি মাসে ৪-৫ বার কলকাতা ভ্রমণে যেতেন। বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্যাপেন্টাডলসহ অন্যান্য অবৈধ মাদক দেশে নিয়ে আসতেন। এ কাজে তিনি তার একাধিক সহযোগীকে ব্যবহার করতেন। গত আগস্টে এ চক্রের একজন সদস্য ফেন্সিডিলসহ বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার হয়। ব্যবসার কৌশল হিসেবে তারা কলকাতা যাওয়ার ক্ষেত্রে যশোর বেনাপোল স্থলবন্দর ব্যবহার করতেন এবং দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে রুট হিসেবে ব্যবহার করতেন।
চক্রটিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা বলেন, সোলাইমানের নেতৃত্বে ট্যাপেন্টাডলের একটি বড় চালান হজরত শাহজালাল আন্তঃবিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটযোগে কলকাতা হতে ঢাকায় আনা হচ্ছে এমন খবর আসে। সে তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রিন চ্যানেলে অবস্থান নিই। আমাদের অপর একটি টিম অ্যারাইভাল এন্ট্রি গেট দিয়ে প্রবেশের সময় থেকে সোলাইমান ও সহযোগীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। তারা ইমিগ্রেশন শেষ করে বেল্ট থেকে তাদের লাগেজ সংগ্রহ করে কাস্টমস চেকিংয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করে গ্রিন চ্যানেলে পার হলে তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সোলাইমান ও তার সহযোগীরা স্বীকার করেন যে, তারা কলকাতা থেকে বিপুল পরিমাণে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট নিয়ে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় সোলাইমানের ট্রান্সি ব্যাগের ভেতর কাপড়ে লুকানো অবস্থায় ৩ হাজার পাতা প্রতি পাতায় ১০ পিস করে মোট ৩০ হাজার ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও হৃদয় ইসলাম রাজু ডান হাতে ঝোলানো স্কুল ব্যাগের ভেতরে ৪০০ পাতার (প্রতি পাতায় ১০ পিস করে ৪ হাজার ট্যাবলেট) সন্ধান মেলে। এবং এ কে এম আবু সাইদের ডান হাতে থাকা শপিং ব্যাগের ভেতর ৩ হাজার পিস ট্যাবলেট পাওয়া যায়। আশিক সাইফের ডান হাতের ব্যাগে ৩ হাজার এবং ফারুকের ডান হাতের ব্যাগ থেকে ২ হাজার ২০০ পিস ট্যাপেন্টাডল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারদের সবার বোর্ডিং পাস ও পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
এমএমআই/এসএএইচ