ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বরিশালে ৫ আ‌‌‌.লীগ নেতার নামে স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
বরিশালে ৫ আ‌‌‌.লীগ নেতার নামে স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা 

বরিশাল: জেলার বানারীপাড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে শোকজ-পাল্টা শোকজের মধ্যে পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলা হয়েছে।

বরিশাল বিচারিক হাকিম আদালতে বুধবার (১৮ অক্টোবর) মামলাটি করেন বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য উত্তম কুমার দাস।

 

তিনি বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি এলাকার বাসিন্দা ও পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার বৈঠাকাটা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক।  

বিচারক সুমাইয়া রিজভী মৌরি অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানান আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

মামলার বিবাদীরা হলেন যথাক্রমে- বানরীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত লাল কুন্ডু, সহ-সভাপতি মোস্তফা সরদার, উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হুদা, মামুনুর রশিদ স্বপন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কতিপয় অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যনির্বাহীর সভা করে এবং সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় এমপি মো. শাহে আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

কিন্তু বিবাদী নিজেদের কিংবা অপরকে লাভবান করতে জন্য এবং বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকলাপকে ক্ষতিগ্রস্ত, হেয়-প্রতিপন্ন ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে মামলার বাদী ও ৫ জন সাক্ষীর স্বাক্ষর জাল করে অপরাধ করেছেন।

বাদী দাবি করেছেন, এমপি শাহে আলমের বিরুদ্ধে প্রকাশিত ‘ভুয়া সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ’ নামায় তিনি (বাদী) ও মামলার ৫ জন সাক্ষী স্বাক্ষর দেননি। সেখানে তাদের জাল স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে।

মামলার ৫ জন সাক্ষী হলেন - বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্ত, সদস্য সেলিম সরদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খাঁ, মিজানুর রহমান মিঠু।

এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. মামুন অর রশীদ বলেন, বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির কিছু সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে একটা প্রতিবাদ গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হয়েছে।  এ ঘটনায় বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগ দিলে, আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইতে পাঠিয়েছে।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শাহে আলমের পক্ষে একটি লেখায় স্বাক্ষর জাল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কমিটির অপর চার সদস্য।  

যেখানে বলা হয়েছে, অভিযোগকারীদের স্বাক্ষর জাল করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচার করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। তাই অভিযোগকারী চার আওয়ামী লীগ নেতা স্বাক্ষর জালিয়াতচক্রের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে ওই অভিযোগপত্রে।

এদিকে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হুদার বিরুদ্ধে ভুল তথ্য উপস্থাপন করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আ. জলিল ঘরামী।  

এ বিষয়ে তিনিও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আর এসব অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস।

উল্লেখ্য, ১৭টি বিভিন্ন অভিযোগের কথা তুলে ধরে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও স্থানীয় এমপি মো. শাহে আলমকে সম্প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগ। শাহে আলমকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ায় ১৭ অক্টোবর বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা আওয়ামী লীগ। এর পর পরই এমপি অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়ে ওঠেন। যার ফলশ্রুতিতে আদালত পর্যন্ত গিয়ে গড়িয়েছে বিষয়টি।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।