ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি পুকুর থেকে চার মাসের শিশু হাজেরার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ।
শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের একটি পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে এ ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন শিশুটির মা রুমা বেগম।
নিহত শিশু হাজেরা উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের প্রবাসী অলিউল্লার মেয়ে।
জানা গেছে, উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে দুবাই প্রবাসী অলি উল্লাহর স্ত্রী রুমা বেগম বেশকিছু দিন যাবৎ মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাতে রুমা বেগম তার বড় মেয়ে খাদিজা (৬) ও ৪ মাস বয়সী অপর কন্যাসন্তান হাজেরাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। মানসিক যন্ত্রণা থেকে রাত ২টার দিকে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার নাম করে শিশু ফাতেমাকে বুকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে পড়েন।
পরদিন ভোরে ঘুম ভেঙে গেলে দেখেন পাশে তার শিশুসন্তান হাজেরা নেই। সন্তান পাশে না থাকায় চিৎকার শুরু করেন রুমা বেগম। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। তার পরিবারসহ প্রতিবেশীরা শিশুটিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে তাদের বাড়ির পাশে একটি পুকুরে শিশু হাজেরার মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে শিশুটির মরদেহ করে।
এই ঘটনায় শিশুর চাচা দেলোয়ার হোসেন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রোববার (২২ অক্টোবর) বিকেলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নিহত শিশুর মা রুমা বেগমকে সন্দেহ হচ্ছিল। তাই আমরা তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রুমা তার সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, তার স্বামী সর্বশেষ দেড় বছর আগে আরব আমিরাতের দুবাই গিয়েছেন। তাদের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। একান্নবর্তী পরিবারের রুমাকে সব কাজ করতে হয়। এ নিয়ে শাশুড়ি ও ননদের অনেক কথাও শুনতে হয় তাকে। তাই শিশু সন্তান হাজেরার সঠিকভাবে যত্নে নিতে পারছিল না। এসব বিষয় নিয়ে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরই জেরে গত শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মধ্যরাতে সে তার শিশু সন্তান হাজেরাকে নিজেই বাড়ির কাছাকাছি একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
এসএম