ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান রিপন

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান রিপন

মানিকগঞ্জ: মানুষের জীবন বৈচিত্র্যময় ঠিক তেমনি চরাঞ্চলের মানুষ এবং চরের বাইরের মানুষের জীবনের মধ্যে পার্থক্য দৃশ্যমান। প্রকৃতিগতভাবে চরের মানুষ সহজ সরল ও আত্মীয়তা পরায়ণ হয়ে থাকে বলে জানান জেলার হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর ওপারে লেছরাগঞ্জের নটাখোলার ঘোড়ার গাড়ি চালক রিপন হোসেন খাঁ (২৫)।

সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পদ্মা তীরবর্তী চরাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় ঘোড়ার গাড়ি চালক যুবকের সঙ্গে। পারিবারিক সচ্ছলতা, ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া এবং মায়ের সুস্থতার জন্যই ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে টাকা উপার্জন করে বলে জানান রিপন খাঁ।

রিপন খাঁ বলেন, আমরা দুই ভাই দুই বোন। বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে, এখন ছোট ভাই আর মা-বাবাকে নিয়েই আমাদের সংসার জীবন। সংসারের অভাব অনটন দেখেই বড় হয়েছি। বাবার পক্ষে একা সংসার চালানো খুবই কষ্টকর। বাবার এই কষ্ট দেখে আমি বাধ্য হয়েই লেখাপড়া ছেড়ে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে কর্মজীবনে নেমেছি।  

ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া, বাবার আয়ে মায়ের ওষুধ ও সংসারের খরচ চলে।  

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ভোরে বেড় হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোড়ার গাড়ি চালাই। আমার সব খরচ বাদ দিয়ে ৭০০ টাকা থাকে। মাঝে মাঝে আবার একটু বেশি আয় হয়। আমরা যারা চরাঞ্চলে বসবাস করি তাদের লবণ ছাড়া কোনো কিছুই কিনতে হয় না। তেল থেকে চাল পর্যন্ত সব কিছু আমরা উৎপাদন করে খাই। যে কারণে চরাঞ্চলের মানুষ অন্যত্র যেতে চায় না।

জানা গেছে, রাতের অন্ধকার কেটে প্রতিদিন ভোরের আলোয় জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে বেড় হয় রিপন হোসেন খাঁ। ছোট বেলা থেকেই পারিবারিক জীবনের সচ্ছলতার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। চরাঞ্চলের আঁকাবাঁকা মেঠোপথে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে মালামাল ও যাত্রী ভাড়া নেওয়ার কাজ করে থাকেন। মাঝেমধ্যে পায়ে হেঁটেই পাড়ি দিতে হয় চরাঞ্চলের মেঠো পথ।  

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, চরাঞ্চলের মানুষ খুবই সহজ সরল জীবন যাপন করেন এবং তারা খুবই পরিশ্রমী। ওই মানুষগুলো কখনোই কারও কোনো ক্ষতি করে না। কারো সঙ্গে কোনো বিবাদ করে না, তারা আত্মীয়তা পরায়ণ।  

তিনি আরও বলেন, চরে আগে তেমন কোনো রাস্তাঘাট ছিল না। বর্তমানে ইট সলিং রাস্তাঘাট হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটি পুলিশ ফাঁড়িও হয়েছে চরাঞ্চলে। সেজন্য চরের মানুষ খুবই নিরাপত্তার সঙ্গে বসবাস করছে পারছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।