পাথরঘাটা (বরগুনা): জমি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য ভূমি অফিসে গিয়ে সুলতান ফকির (৮০) জানতে পারলেন, তিনি আর বেঁচে নেই। জীবিত থাকা সত্ত্বেও ভোটার তালিকায় তাকে মৃত দেখানো হয়েছে।
আর ভোটার তালিকায় মৃত দেখানোর কারণে সরকারি বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তিনি।
ভুক্তভোগী সুলতান বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকার বাসিন্দা।
সুলতান ফকির জানান, তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে বাড়িতেই থাকেন। করোনার সময় তিনি করোনার টিকাও নিয়েছেন। গত বুধবার সকালে পাথরঘাটা ভূমি কর্মকর্তার অফিসে জমি রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কাগজপত্র তুলতে গিয়ে দেখেন, তার নাম ঠিকানা দেখা যাচ্ছে না। তাই সেখান থেকে ফিরে আসেন তিনি। পরে পাথরঘাটা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে দেখতে পান, তিনি মৃত। মৃত দেখিয়ে তার নাম অনেক আগেই সার্ভার থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে তাকে নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, অনেক সময় জমি লিখে নেওয়ার জন্য ছেলে-মেয়েরা এটা করে থাকেন। তারা নির্বাচন কার্যালয়ের কম্পিউটারে দেখেছেন যে এটা তার ছেলে ইদ্রিস করেছেন! ভোটার তালিকায় নাম তুলতে নির্বাচন কার্যালয়ে আবেদন দিতে চাইলে তদন্ত না করে কিছুই করা যাবে না বলে তাকে জানিয়েছেন নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মকর্তা।
সুলতান ফকিরের ছেলে ইদ্রিস ফকির বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, এটা তো আশ্চর্য হওয়ার মতো বিষয়। আব্বা তো বেঁচে আছেন, তাকে কেন মৃত দেখাতে এ রকম করব? অনেক আগে আমার মা মারা গেছেন, তাও তো কিছুই করলাম না। এটা কীভাবে হয়েছে, তা আমার জানা নেই।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সার্ভারে সুলতান ফকিরকে মৃত দেখানো হয়েছে। তার ছেলে ইদ্রিস নির্বাচন কমিশনের ১২ নম্বর ফর্ম পূরণ করে স্বাক্ষর দিয়ে আবেদন করার পর তাকে মৃত দেখানো হয়। এর একটি ডকুমেন্ট আমাদের সার্ভারে সংরক্ষিত আছে। আমার ধারণা, সুলতান ফকিরের ছেলে বাবাকে মৃত দেখিয়ে সব সম্পত্তি নিয়ে গেছেন। আমরা তদন্ত করব, তারপর নতুন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে ইদ্রিসের নামে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২৩
এসআই