ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সদরঘাটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক, যাত্রী খরায় টার্মিনাল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
সদরঘাটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক, যাত্রী খরায় টার্মিনাল

ঢাকা: বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা অবরোধে ও বাম জোটের অর্ধদিবসের হরতালে রাজধানীর সদরঘাটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে যাত্রী খরায় ভুগছে টার্মিনালটি।

যাত্রী কম থাকায় টার্মিনাল থেকে লঞ্চ ছেড়েছে কম। এদিকে যারা ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন তারা মূলত রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কি হবে সেটা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে গ্রামে ফিরছেন। আবার এ সময়ে কেউ বেকার হয়ে পরিবার নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। এছাড়া সদরঘাট ও এর আশেপাশে এলাকা স্বাভাবিক ছিল।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

প্রসঙ্গত, বিএনপি ও সমমনা দলের একদফা দাবিতে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ চলছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতালের আহ্বান করেছে।

সরেজমিন সদরঘাট গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালে পল্টুনে সারিবদ্ধভাবে নোঙর করা আছে লঞ্চ। তবে ছিল না যাত্রীদের কোনো শোরগোল। সকাল থেকে বিভিন্ন রুটে নিদিষ্ট সময়ে লঞ্চ ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। তবে লঞ্চগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। বেলা ১২টা পর্যন্ত চাঁদপুর, নড়িয়া, মৃদারহাট, ইলিশাসহ বিভিন্ন রুটে ১৬টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। কিছু লঞ্চে যাত্রী কম থাকায় তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজকে যাবে না।

ঢাকা-হুলিয়ার হাট রুটে চলাচলকারী রাজদূত লঞ্চের স্টাফ আরিফ বাংলানিউজকে বলেন, নৌপথে কোনো অবরোধ-হরতাল থাকে না। কিন্তু অবরোধ হরতাল থাকলে যাত্রী কমে যায়। আর যাত্রী কমে গেলে লঞ্চ মালিকদের লোকসান হয়। গত তিন সপ্তাহ ধরে যাত্রী নেই বললেই চলে। মনে হচ্ছে রাজনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত এরকমই থাকবে।

চাঁদপুরের ঈদগাঁ ফেরিঘাটগামী ইমাম হাসান-২ লঞ্চের ইনচার্জ কেরাণী রবিন্দ্র চন্দ্র দে বলেন, হরতাল অবরোধে জন্য যাত্রী কম। সকালে চাঁদপুর লাইনে তিন থেকে চারটি লঞ্চ চলাচল করে। আজকে সব কয়টি যাচ্ছে। কিন্তু যাত্রী কম থাকায় লোকসান দিয়ে চলতে হচ্ছে। নির্বাচন এলে এরকম হয় সব সময়। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য সাধারণ মানুষের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ক্ষতির সম্মুখীন হন ব্যবসায়ীরা।

এম ভি টিপু লঞ্চের কেরাণী মো. হাছান বাংলানিউজকে বলেন, টার্মিনালের এ অবস্থায় আমরা ভালো থাকি কেমনে। আমরা লঞ্চ চালাচ্ছি ঠিকই কিন্তু লোকসান গুণতে হচ্ছে। আগামী তিন চার মাস এরকম থাকবে বলে মনে হচ্ছে।

ঢাকার মিরপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রাইভেটকার চালন মো. ইমন শেখ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, অবরোধ হরতাল কতদিন চলবে কে জান। গত চার সপ্তাহে মাত্র চার পাঁচ দিন গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। প্রতিষ্ঠান থেকে বলছে কয়েকদিন গ্রাম থেকে ঘুরে আসতে। তাই গ্রামে যাচ্ছি। আসলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত ঢাকাতে আসবো না। নিরাপদ থাকতে বাড়ি যাচ্ছি।

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বিআইডব্লিউটিএ’র ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর মো. হুমায়ুন কবির বাংলানিউজকে বলেন, হরতাল-অবরোধ হলে সাধারণভাবে যাত্রী কম থাকে। তবে আমাদের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক আছে। সদরঘাট এলাকায় হরতালের কোনো মিছিল বা পিকেটিং দেখা যায়নি। টার্মিনাল এলাকায় শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে।

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বিআইডব্লিউটিএ’র কন্ট্রোল রুম থেকে জানা যায়, আজ রাত ১২টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ১০টি রুটে ১৫টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এরমধ্যে চাঁদপুরে চারটি, ইলিশায় তিনটি, নড়িয়ায় দুইটি, মূলাদিতে একটি, হাটুরিয়া দুইটি, চরভৈরবিতে একটি, মৃধারহাটে একটি, ঈদগাঁ ফেরিঘাটে দুইটি ও নরসিংহপুরে একটি লঞ্চ গেছে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের হাতিয়া, মুলাদি, চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, ঘোষের হাট, লালমোহন, বোরহান উদ্দিন, কালাইয়া, ভাষানচর, বেতুয়া, পাতার হাট, ইলিশাসহ ২৫টি রুট থেকে ঢাকায় লঞ্চ আসে ৩৬টি। অন্যদিকে স্বাভাবিক সময়ে আরও বেশি লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যায়। আজকে যাত্রী কম দেখে লঞ্চ কম যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২৩
জিসিজি/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।