ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সৌদিতে নির্যাতনে নিহত হানিফের মরদেহ ৫ মাস পর দেশে 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩
সৌদিতে নির্যাতনে নিহত হানিফের মরদেহ ৫ মাস পর দেশে 

ঢাকা: সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত মো. হানিফ নামে এক প্রবাসীর মরদেহ দেশে এসেছে। রোববার সন্ধ্যায়  মরদেহ দেশে এলে সোমবার সকালে পরিবারের হস্তান্তর করা হয়।

হানিফ (৩৩) নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মোতালেবের ছেলে। সোমবার সকালে বিমানবন্দর থেকে তার মরদেহ নিয়েছে পরিবার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।

এয়ারপোর্ট এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, রোববার বিকেল ৪টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে (বিজি-৩৪০) দেশে আসে হানিফের মরদেহ।  

তিনি জানান, রিক্রুটিং এজেন্সি অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারসিজের (আরএল ১৩৮৪) মাধ্যমে সৌদি গিয়ে নির্যাতনের শিকার হন হানিফ। ব্র্যাক ও এপিবিএনের যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে দীর্ঘ পাঁচ মাস পর দেশে ফিরল হানিফের মরদেহ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক আরও জানান, ‘রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি গিয়ে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যু, লাশ দেশে আনার আকুতি’ শিরোনামে চলতি বছরের ৩ জুলাই খবর প্রচার হলে বিষয়টি বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) নজরে আসে। খবরের সূত্র ধরে হানিফের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্র্যাক ও এপিবিএন। তারা মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনার বিষয়ে পরিবারকে আশ্বস্ত করেন।

তিনি জানান, জীবিকার সন্ধানে রিক্রুটিং এজেন্সি অপশন ম্যানপাওয়ার ওভারসিজের মাধ্যমে সৌদি আরবের আভা শহরে গিয়ে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে হানিফের মৃত্যু হয়। গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর সেখানে বসবাসকারী নিকটাত্মীয়রা মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। ফলে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল।

মৃত হানিফের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা হানিফ অভাবের তাড়নায় ছোটবেলা থেকে নির্মাণশ্রমিকের (রাজমিস্ত্রি) কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। চলতি বছরের ১২ মার্চ সৌদি আরবে যান ।
 
দেশটিতে যাওয়ার পর তাকে রাজমিস্ত্রির কাজ না দিয়ে আভা শহরে ভেড়া চরানোর চাকরি দেওয়া হয়। যে মালিকের অধীন তাকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ওই ব্যক্তি তাকে নানা ধরনের শারীরিক নির্যাতন করত।  

বিষয়টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে জানানোর পর তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে, সেখানে নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৬ জুন রিয়াদের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় হানিফ মারা যান।

এয়ারপোর্ট এপিবিএন এ বিষয়ে সৌদিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে বারবার যোগাযোগ করলে রোববার অবশেষে তার মৃতদেহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরত আসে। সোমবার সকালে ভুক্তভোগী মো. হানিফের স্ত্রী আফিয়া খাতুন এবং তার ভাই বিমানবন্দরে তার মরদেহ নেন। এ সময় সেখানে আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২৩
এমকে/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।