ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ এগিয়েছে কিন্তু মানুষ পিছিয়েছে: সৈয়দ আনোয়ার হোসেন  

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
বাংলাদেশ এগিয়েছে কিন্তু মানুষ পিছিয়েছে: সৈয়দ আনোয়ার হোসেন   যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজে ‘বঙ্গবন্ধুর ধর্ম-চেতনা ও নীতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

যশোর: বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চেয়ার প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ভাবে প্রযুক্তির কারিগর তৈরি হবে। কিন্তু কারিগর তৈরি করে কোনো লাভ হয় না।

দরকার মানুষ হয়ে গড়ে তোলা। সেই মানুষ গড়ে উঠছে না। বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। প্রবৃদ্ধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু মানুষ পিছিয়েছে। মানুষের পিছিয়ে যাওয়ার এই প্রমাণ আমরা দেখতে পাই প্রতিদিনের গণমাধ্যমগুলোতে অপরাধের চিত্রে। ফলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে।  

রোববার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজে (এম এম) ‘বঙ্গবন্ধুর ধর্ম-চেতনা ও নীতি’ বিষয়ক আলোচনা ও সেমিনার প্রবন্ধ সংকলন’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

কলেজের শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার।

প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতিহাস ছাড়া কোনো জাতি এগিয়ে যেতে পারে না। আমাদের ইতিহাস জানতে হবে। আমি যুদ্ধ দেখেছি, বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য শুনেছি। ভেবেছিলাম কিউবার মতো বাংলাদেশ একটি দেশ হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারা, এক্সপ্রেসওয়ে, মেট্রোরেলের এই বাংলাদেশ আমি চাইনি। আমি চেয়েছিলাম এই দেশের মানুষ খেয়ে পরে সুখে থাকবে। পেটে আর পকেটে স্বস্তিতে থাকবে। এই কথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি রেসকোর্স  ময়দানে ১৭ মিনিটের বক্তব্যতে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু দুঃখের কথা; সেই দেশ এখনো হয়ে ওঠেনি। আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে সেই দেশ পাওয়ার জন্য। ’

বিশ্বে শাসক বেড়েছে; শাসন নাই বলে মন্তব্য করে এই ইতিহাসবিদ বলেন, ‘গাজা নিয়ে বাংলাদেশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। ঠিকমতো ওষুধ পাঠানো হয়নি। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছে সেটাতে বাংলাদেশের সহযোগিতা রয়েছে। তবে খুবই কষ্ট লাগে বলতে, দেশের অন্যতম রাজনীতিদল বিএনপি ও জামায়াত গাজা যুদ্ধে ইসরায়েল ভূমিকা নিয়ে টু শব্দ পর্যন্ত করেনি। কারণ তাতে আমেরিকা রুষ্ট হবে। দিনে দিনে শাসক বেড়েছে; শাসন নাই। ’

অধ্যাপক প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভার নাম মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সনেট রচনা করে তিনি সাহিত্যে আধুনিকতার নতুন দিক উন্মেচন করেছেন। মধুসূদন উপলব্ধি করেছিলেন মাতৃভাষা ছাড়া প্রতিভা বিকাশ সম্ভব নয়। তাই তিনি মাতৃভাষায় সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। সেই থেকেই শুরু হয় বাংলা সাহিত্যের জাগরণ। সেই কবির নামে এই কলেজটি দাঁড়িয়ে রয়েছে।  

এসময় তিনি কবির জন্মস্থান যশোরের কেশবপুরে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দাবি দীর্ঘদিনের; তার প্রতি একত্মতা ঘোষণা করেন তিনি।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মাধ্যমিক ও উচ্চ  মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. আহসান হাবিব, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. শওকত আরা হোসেন, যশোর রামকৃষ্ণ আশ্রম  ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী জ্ঞানপ্রকাশানন্দ, কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আবু বক্কর সিদ্দিকী,  শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মদন কুমার সাহা।  

স্বাগত বক্তব্য রাখেন  সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সেমিনার প্রবন্ধ সংকলন কমিটির আহ্বায়ক ড. খ. ম. রেজাউল করিম। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।  

অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে সেমিনার প্রবন্ধ সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। বহুমুখী বিষয়ভিত্তিক এ সংকলনে মোট ১৮টি প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি বাংলা ও ৩টি ইংরেজি ভাষায় রচিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২২, ২০২৪
ইউজি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।