ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

যশোরে ৮ মাসে ২৪৮ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
যশোরে ৮ মাসে ২৪৮ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

যশোর: ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের আওতায় যশোরে গত ৮ মাসে (জুলাই ২০২৩ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৪) ১২৩টি বাজার তদারকি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন হওয়ায় ২৪৮টি অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এছাড়া এ সময়ের মধ্যে ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘিত হওয়ায় ৯৯টি লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৯১টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় চার প্রতিষ্ঠান মালিকের কাছ থেকে নয় হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে অভিযোগকারীকে জরিমানার ২৫ শতাংশ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সারা দেশের সঙ্গে যশোরেও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি, ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি’ স্লোগানকে সামনে রেখে শুক্রবার (১৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যশোরের আয়োজনে শুক্রবার সকালে কালেক্টরেট চত্বরে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে এ দিবসের উদ্বোধন করা হয়।  

পরে জেলা প্রশাসকের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম শাহীন ব্যবসায়ীদের সংযমের মাসে অধিক মুনাফার আশা পরিহার করে নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে আহ্বান জানান। একই সঙ্গে নিয়মিত বাজার তদারকিসহ অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ বর্ণিত ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব এবং ভোক্তা অধিকার বিরোধীদের কার্যকলাপ, অপরাধ এবং দণ্ড সম্বন্ধে সম্যক ধারণা থাকলে অধিকার প্রয়োগ সহজ হয়। তাই এ ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনিম।  

মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) যশোরের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহুর আহমেদ, এপিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা ভীম সেন দাস, নাসিব যশোরের সভাপতি সাকের আলী, ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমেদ রনি, বেকারি মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ আবুল হোসেন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং মালিক সমিতি যশোরের সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশীদ, ক্যাব যশোরের সদস্য সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, গোলাম রব্বানী প্রমুখ।

সভায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক সৈয়দা তামান্না তাসনিম বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা অধিকার বিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ প্রণয়ন করে।  

তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ ও অপরাধের মধ্যে রয়েছে, পণ্যের মোড়ক ব্যবহার না করা, মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা, সেবার মূল্যের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা, ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ওষুধ বা সেবা বিক্রয়, ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ, মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা, প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা, ওজনে কারচুপি, বাটকারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি, দৈর্ঘ্য পরিমাপে কারচুপি, পণ্যের নকল প্রস্তুত বা উৎপাদন, মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ বিক্রয়, সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কাজ, অবহেলা বা অন্য কোনোভাবে সেবা গ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ঘটানো, কোনো ব্যক্তি, ব্যবসায়ী বা সেবা প্রদানকারীকে হয়রানি বা জনসমক্ষে হেয় করা বা তার ক্ষতি সাধনের অভিপ্রায়ে মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড হবে। আর এ আইন বাস্তবায়নে বাজার তদারকি অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৪
ইউজি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।