নওগাঁ: দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত চাষিরা। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত এক করে চলছে কাজ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা নিয়ে দ্রুত সফল ঘরে তোলার চেষ্টা কৃষকদের। যদিও কয়েকদিন আগের হওয়া বৃষ্টিতে কিছুটা ছন্দপতন ঘটে ধান কাটায়।
নওগাঁ মহাদেবপুর উপজেলার নওহাটা এলাকার চাষি জাইদুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে প্রত্যাশায় প্রাপ্তি যোগ হয়েছে ধানের ফলনে। গেল বছরের তুলনায় এবছর ধানের ফলন হয়েছে ভালো। জমি অনুযায়ী বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৪ মণ ধান পাওয়া গেছে। আবার কোনো মাঠে বিঘাপ্রতি ২৮ মণ ধান পেয়েছে কৃষক। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল এবং পোকার আক্রমণও ছিল তুলনামূলক কম। আসলে বর্তমান সময়ে
কীটনাশক ছাড়া চাষাবাদ করা অসম্ভব।
শহরের বাইপাস এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, দিন দিন বাড়তি হচ্ছে বিদ্যুতের দাম। বাড়ছে সার, কীটনাশক এবং শ্রমিকের মজুরি। সব মিলে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে চাষাবাদের উৎপাদন খরচ। এক বিঘা জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে, ধান রোপণ, আগাছা পরিষ্কার, সার কীটনাশক ও পানি সেচ এবং ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ হয় ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমির ধান বেচে পাওয়া যায় ২৪ হাজার টাকা। ৩ মাস কষ্ট করে এত অল্প লাভে কৃষকের চাষাবাদ করা লোকসান।
নওগাঁয় ধানের বড় হাট আবাদপুকুরে গিয়ে দেখা যায় ১ সপ্তাহ আগে প্রতি মণ জিরা জাতের ধান বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১২শ টাকা মণ। এবং এক সপ্তাহ পর এখন সেই ধান বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১১শ থেকে সাড়ে ১১ শ টাকা মণ। চাষিরা বলছেন এই দামে ধান বিক্রি করে লাভ হবে না। নিরুপায় হয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে নওগাঁয় ধানের চাষ হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন হয়েছে ভালো। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ছিল কম, ফলে কীটনাশকের ব্যবহার লেগেছে অল্প। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ ভাগ ধান কৃষকের ঘরে উঠেছে। এই মাসের মধ্যেই বাকি ধানগুলো কাটা শেষ হবে। কৃষি শ্রমিকের পাশাপাশি কৃষি বিভাগের ৪০টি কম্বাইন হারভেস্টার মিশন ধান কাটতে কৃষকদের সহযোগিতা করছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষক সুন্দরভাবে ধান কাটতে পারছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৪
আরএ