ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

১১ মাস ধরে বাড়ি ছাড়া দুই শতাধিক পরিবার, ঈদেও আসতে পারছে না বাড়িতে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
১১ মাস ধরে বাড়ি ছাড়া দুই শতাধিক পরিবার, ঈদেও আসতে পারছে না বাড়িতে!

নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের পেড়লী গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহায়ও বাড়িতে ঈদ করতে পারছেন না। যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ হত্যাকে পুঁজি করে বাদী পক্ষের অব্যাহত হুমকি-ধামকিতে আসামিপক্ষের লোকজন বাড়িতে যেতে পারছেন না।

এ মামলায় এজাহারভুক্ত ২০ জন আসামি জামিনে থাকলেও তাদের পক্ষীয় এসব পরিবার দীর্ঘ ১১ মাস বাড়ি ছাড়া রয়েছেন।

জানা গেছে, উপজেলার পেড়লীতে আজাদ হত্যার ঘটনায় গত শনিবার (১৫ জুন) আসামিপক্ষের দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় ৫০০ নারী-পুরুষ ও শিশু পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করে নিজেদের বাড়িতে যাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু নিহত আজাদের ভাই সাজ্জাদ ও উজ্জ্বলের নেতৃত্বে তাদের দলীয় লোকজন মহসিন মোড় বাজার এলাকায় ঢাল, সড়কি, রামদা, ছ্যানদাসহ ইত্যাদি নিয়ে অবস্থান নেন। আর এ কারণে অসহায় এসব পরিবারের লোকজন বাড়িতে যেতে না পেরে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

আসামিপক্ষের মাতুব্বর শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি ও আমার দলের লোকজন শনিবার (১৫ জুন) সকালে নিজ নিজ বাড়ি প্রবেশের জন্য পার্শ্ববর্তী অভয়নগর উপজেলার ইছামতি দিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু প্রতিপক্ষ সাজ্জাদ ও উজ্জ্বলের নেতৃত্বে দুই শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পেড়লী গ্রামের মহসিন মোড়ে অবস্থান নেন। হামলার আশঙ্কায় আমরা বাড়ি ফিরতে পারিনি আমরা। আজাদ শেখ হত্যা ঘটনায় ২০ জনের নামে মামলা হয়েছে। আসামিরা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। কিন্তু আসামিদের পরিবারসহ দলীয় দুই শতাধিক পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে উঠতে পারছেন না। আমাদের বাড়িঘর ভেঙে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে। ’

এ ব্যাপারে সাজ্জাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আমরা কাউকে বাড়ি আসতে বাধা দিচ্ছি না। এছাড়া আমাদের লোকজন কোনো দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কাউকে প্রতিহত করার চেষ্টাও করেনি। তবে এলাকায় এসে কেউ অশান্তি সৃষ্টি করবে সে সুযোগও দেওয়া হবে না।  

পেড়লী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ মহসিন মোড় বাজার এলাকা পরিদর্শন করেছে। কেউ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে চাইলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ২০ জুলাই সন্ধ্যায় যুবলীগ কর্মী আজাদ শেখ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মোট ২০ জনকে আসামি করে কালিয়া থানায় মামলা দায়ের হয়। মামলার আসামিরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। হত্যাকাণ্ডের পরবর্তীতে মামলার বাদীপক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালায়। হামলার ভয়ে অনেকে বাড়িঘর ফেলে অন্যত্র আশ্রয় নেন। এ হত্যাকাণ্ডে প্রতিপক্ষের তাণ্ডবে ১১ মাস বাড়ি ছাড়া রয়েছেন প্রায় দুইশ পরিবার।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।