পটুয়াখালী: বিখ্যাত সঙ্গীত লেখক মীরা দেব বর্মণের লেখা ও শিল্পীর সুর করা এবং সচীন দেব বর্মণের সুরেলা কণ্ঠে গাওয়া ‘কে যাস রে ভাটির গাঙ বাইয়া, আমার ভাইধন রে কইয়ো নাইওর নিতো বইলা’ গানের কথা যেন আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।
অথচ আগে বাঙালি রীতিনীতিতে অন্যতম ছিল জ্যৈষ্ঠ মাসে বাবা বা ভাইয়েরা নিজের আপন বোন বা ফুফুদের বাবার বাড়িতে নাইওর আনা।
বাঙালির প্রথাগত সংস্কৃতির আলোকে পটুয়াখালীতে অনুষ্ঠিত হলো নাইওর উৎসব।
বুধবার (১৯ জুন) সকালে জেলা শিশু একাডেমি মিলনায়তনে নাইওর উৎসবের আয়োজন করে দখিনের কবিয়াল।
জেলার তিন শতাধিক কন্যা সন্তানের বাবা, মা, কন্যা ও জামাতাদের নিয়ে দিনব্যাপী নাইওর উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নূর কুতুবুল আলম ও পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে পিঠাপুলি, জ্যৈষ্ঠ মাসের আম কাঁঠালসহ দেশীয় ফল ও বাহারি খাবারের আপ্যায়নে খুশি দম্পতি ও নববধূরা। এ আয়োজন দেশের ইতিহাস হয়ে থাকবে বলে জানান আগতরা।
নাইওর উৎসবের আহ্বায়ক মারজিয়া আক্তার বলেন, জ্যৈষ্ঠ মাস এলেই ভাইরা, তাদের বোন ভগ্নিদের নাইওর আনতো। আজ প্রথা নানান কারণে হারিয়েছে। আমরা বাঙালির সম্প্রীতি, পারিবারিক বন্ধন ও ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে পটুয়াখালীতে তৃতীয়বারের মতো নাইওর উৎসবের আয়োজন করে যাচ্ছি।
আয়োজক সংগঠন দখিনের কবিয়ালের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক বলেন, আমরা দেশীয় শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে বাঙালির ঐতিহ্যকে নতুন করে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন উৎসব পালা পার্বণে নানান ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করছি। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের নাইওর উৎসব একটি।
ডিসি নূর কুতুবুল আলম বলেন, কন্যা সন্তানরা যাতে ভাইয়ের অভাবে বিখ্যাত ও পারিবারিক আচারের মধ্যে অন্যতম নাইওর হতে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য দখিনের কবিয়ালের নাইওর উৎসবে এই আয়োজন প্রশংসার দাবিদার। তারা তৃতীয়বারের মতো অত্যন্ত সুন্দর একটা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এতে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বলে দেয়, এটি জনপ্রিয়তা কতটুকু। জেলা প্রশাসন সব সময় সুন্দর ও ভালো কাজের পাশে থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৪
এসআরএস