মাদারীপুর: মাদারীপুরে দুই শিশুকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা ঘটনায় তাহমিনা তাবাচ্ছুম (২৬) নামে তাদের মাকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে নিহত দুই শিশুর চাচা আরমান খান বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন।
এ ঘটনায় আটক শিশুদের মা তাহমিনাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে, বিকেলে ওই দুই শিশুর ময়নাতদন্ত শেষে শিশুদের চাচার কাছে মরদেহ দুটি হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাদারীপুর শহরের সবুজবাগ এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের মালিকাধীন ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ওই দুই শিশুর নাম জান্নাতুল ফেরদাউস ও মেহেরাজ খান। এদের মধ্যে মেহেরাজের বয়স এক বছর ও জান্নাতুলের বয়স দুই বছর ৮ মাস। এ সময় নিহত দুই শিশুর মা তাহমিনাকে ওই ফ্ল্যাট থেকে আটক করে পুলিশ।
তাহমিনা শরীয়তপুর সদর উপজেলার পশ্চিম সারেঙ্গা এলাকার সৌদিপ্রবাসী হালিম খানের স্ত্রী ও একই উপজেলার টাউন চিকনদি এলাকার তারা মিয়া সরদারের মেয়ে। তারা মিয়া কাজের সুবিধার্থে মাদারীপুর শহরের সবুজবাগ এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন। তাহমিনা মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় কয়েক মাস ধরে তিনি দুই সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
পুলিশ ও মামলার সূত্র জানায়, বুধবার দুপুরে তাহমিনা তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে তার কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। পরে তাহমিনার মা নারগিস বেগম একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও তিনি কোনো সাড়া দেন না। বিষয়টি সন্দেহ হলে নারগিস বেগম তার ছোট ছেলে সোহেল সরদারকে বিষয়টি জানান। পরে সোহেল শরীয়তপুর থেকে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মাদারীপুর আসেন। সোহেল অনেক চেষ্টা করেও তার বোন তাহমিনার কক্ষে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হলে জরুরিসেবা ৯৯৯ -এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে দুই শিশুকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ সময় ওই কক্ষের মধ্যেই অবস্থান করছিলেন মা তাহমিনা। এ ঘটনায় মাকে অভিযুক্ত করে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহত শিশুদের চাচা আরমান খান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মাদারীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শুভঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘নিহত ওই দুই শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে মামলার বাদী নিহত দুই শিশুর চাচার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর মাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশনা দেন। ’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, শিশু দুটিকে হত্যায় অভিযুক্ত মা সুস্থ না, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। এলোমেলো ভাবে কথা বলতে থাকেন তিনি। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
এসআরএস